Tarkeshwar Mandir : ‘ঈশ্বর-আল্লা সবাই এক’, অটুট বিশ্বাসে মানত করে তারকেশ্বরে জল ঢাললেন সারফুল – hooghly muslim person has worshiped at tarkeshwar mandir


রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারেই বলেন, বাংলায় সমস্ত ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন। তাঁকে আরও বলতে শোনা যায় ধর্ম হোক যাঁর যাঁর, উৎসব সবার। আর এবার সেই ধর্ম নিরপেক্ষতারই ছবি হুগলির চুঁচুড়ায়। শ্রাবণের আর পাঁচজন শৈবভক্তের মতোই তারকেশ্বরে বাবা তারকনাথের মাথায় জল ঢালতে গেলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তি।

চুঁচুড়া এম জি রোড জেলেপাড়া থেকে কয়েকজন বন্ধু মিলে তারকেশ্বর মন্দিরে বাবার মাথায় জল ঢালতে রওনা হন মঙ্গলবার রাতে। চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বরতলা ঘাট থেকে কলসি করে জল নিয়ে রওনা দেন রাজু, অক্ষয়, সুরজ, প্রসেনজিৎ,বাসুদেব, উদয়রা। তাঁদেরই সঙ্গে আরও একজন রওনা দেন বাবার মন্দিরের উদ্দেশে। তিনি শেখ সারফুল আলি। তঁদের মধ্যে কেউ কাজ করেন রাজমিস্ত্রির, কেউ বিক্রি করেন মাছ, কেউ বা করেন সেলসম্যানের কাজ। সবাই থাকেন মিলেমিশে। তাঁদের মধ্যে নেই কোনও ভেদাভেদ, নেই একের অপরের ধর্মের প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ।

Tarakeswar Mandir : কেউ গাঁজার ‘হ্যালে’, কেউ মদের ঘোরে! বাবার মাথায় জল ঢালতে গিয়ে বেসামাল পুণ্যার্থীরা
‘সবার ওপরে মানুষ সত্য’, মূলত এই মন্ত্রেই বিশ্বাসী রাজু, সুজয় সারফুলরা। আর সেই কারণেই হিন্দু দেবতার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে মানত করেন শেখ সারফুল আলি। তিনি বলেন, ‘একটা মানসিক ছিল, তাই বাবার মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছি।’ কিন্তু ভিন্ন ধর্মের মানুষ হয়ে, হিন্দু ধর্মের দেবতার প্রতি এত আস্থা ও বিশ্বাস? উত্তরে সারফুল বলেন, ‘ঈশ্বর-আল্লা সবাই এক’! আর শুধু সারফুল নয়, তাঁর বন্ধুরাও ধর্মে-ধর্মে বিভেদ দেখেন না। বাসুদেব-উদয়দের মতে, সব ধর্মই শান্তির কথা বলে, কোনও ধর্মই হিংসার কথা বলে না।

Tarakeswar Mandir Shravani Mela: শ্রাবণী মেলা উপলক্ষে পুণ্যার্থীর ঢল, তারকেশ্বরে রেলের রেকর্ড লাভ
প্রসঙ্গত, শ্রাবণ মানেই বাবা ভোলানাথের মাস। এই সময় তারকেশ্বর বা ঘণ্টেশ্বরের মতো শিব মন্দিরগুলিতে বাবার মাথায় জল ঢালতে প্রায় প্রতিদিনই ভিড় জমান ভক্তরা। শুধু স্থানীয় মানুষজনই নয়, দূরদূরান্ত থেকে বাঁকে করে জল নিয়ে ভক্তরা যান বাবার মাথায় জল ঢালতে। প্রত্যেকের একটাই আশা ও প্রার্থনা, বাবার মাথায় জল ঢেলে তাঁর আশীর্বাদ পাওয়া ও নিজের মনোবাঞ্ছা পূরণ করা। তেমনই হয়ত কোনও মনোবাঞ্ছা নিয়ে বাবার কাছে মানত করেছিলেন সারফুল। আর সেই কারণেই এবার গেলেন বাবা তারকনাথের মাথায় জল ঢালতে। কেউ কেউ বলছেন, এই সারফুলদের মতো মানুষেরা আছেন বলেই হয়ত আজও ‘পৃথিবীটা সুন্দর’। কারণ তাঁদের কাছে ধর্ম নয়, মানুষই শেষ কথা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *