৩০ আসনের শিউলি পঞ্চায়েতের একটি আসনে এক প্রার্থী মারা যাওয়ায় ভোট হয় ২৯টি আসনে। ২৪টি পায় তৃণমূল। দলের উপরমহল থেকে বিদায়ী প্রধান অরুণ ঘোষের পরিবর্তে প্রধান পদে দু’বারের সদস্য সঞ্জীব ঘোষের নাম প্রস্তাব করে পাঠানো হয়। সঞ্জীব-সহ মোট পাঁচ জন তৃণমূল সদস্য হাজির হন। অরুণ এবং আরও জয়ী ১৮ সদস্যের দিনভর কোনও খোঁজই মেলেনি। দলের নেতৃত্ব একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করলেও তাঁদের আর পঞ্চায়েতে আনা যায়নি। অরুণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর স্ত্রী পরিচয় দিয়ে এক মহিলা বলেন, ‘ও অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি।’ এই অবস্থায় ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক-সহ অন্যান্য বিধায়কেরা।
তাতেও লাভ বিশেষ হয়নি। পার্থ বলেন, ‘যাঁরা এলেন না, তাঁদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হবে। প্রশাসনিক নিয়ম মেনেই দলের প্রধান নির্বাচন করা হবে।’ হুগলির আরামবাগের সালেপুর ১ পঞ্চায়েতের ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১০টি। বাকি ছ’টি বিজেপির দখলে। কিন্তু প্রধানের পদটি এসসি মহিলা সদস্যের জন্য সংরক্ষিত। তৃণমূলের তেমন কোনও প্রার্থী জয়ী হননি। ফলে একরকম বাধ্য হয়েই বিজেপি সদস্য পূর্ণিমা মান্ডিকে প্রধান পদ দিতে বাধ্য হয় তৃণমূল। উপপ্রধান হন তৃণমূলের সত্যজিৎ চক্রবর্তী।
তবে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় খানাকুল ১ পঞ্চায়েতের রামনগর এলাকা। এই পঞ্চায়েতের ১৭টির মধ্যে তৃণমূল ও বিজেপি পেয়েছে ৮টি করে আসন। একটি আসন গিয়েছে সিপিএমের দখলে। এদিন বোর্ড গঠনে সিপিএম সদস্য হাজির না থাকলেও তিনি লিখিত ভাবে তৃণমূলকে সমর্থন করার কথা জানান। বিজেপি প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করলে প্রথমে হাতাহাতি এবং পরবর্তী কালে ইটবৃষ্টি থেকে দু’পক্ষের বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নেওয়া হয়। র্যাফ নামিয়ে রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে অশান্তির ঘটনা ঘটে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের পশ্চিম শীতলপুর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আগে প্রধান পদপ্রার্থী সিপিএমের শেখ জব্বারকে খুনের একটি পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তারের পরেই উত্তেজিত জোট সমর্থকরা পুলিশের উপর হামলা ও পুলিশ গাড়িতেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ভগবানপুর ২ পঞ্চায়েতের জুখিয়া পঞ্চায়েতে টসে জিতে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। তার পরে দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
নন্দীগ্রামের মহম্মদপুর পঞ্চায়েতে ভোটাভুটিতে দলীয় ৬ সদস্যের পাশাপাশি বিজেপির ৬ সদস্য ভোট দেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই হাবিবুলের পক্ষে। মুর্শিদাবাদের নওদার চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হতেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে প্রচুর মানুষ জড় হলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের ভক্তাবাঁধ পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন চলাকালীন বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের অফিসে ঢুকতে না-দেওয়ায় গোলমাল বাধে দু’পক্ষের।