Jadavpur University News : যাদবপুরে পৃথক হস্টেল পেতে চলেছে ফ্রেশাররা, তিন দিনে সব হস্টেল থেকে সরতে হবে প্রাক্তনীদের – jadavpur university authorities arranged a completely separate hostel for the first year students


এই সময়: একটি মৃত্যুর বিনিময়ে অবশেষে শিক্ষা নিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। সোমবার অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য একটি সম্পূর্ণ পৃথক হস্টেলের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত ক্যাম্পাসের নিউ ব্লক হস্টেলকে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ করার কথা আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি হস্টেলে সিসিটিভি লাগানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি নির্দেশ দিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যতগুলি হস্টেল আছে সেখান থেকে প্রাক্তনীদের বেরিয়ে যেতে হবে। নইলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

JU Ragging: ব়্যাগিং বিরোধী নির্দেশিকা না মানার অভিযোগ, যাদবপুরের পড়ুয়ায় মৃত্যুতে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে
অন্যদিকে এ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে বসে অধ্যাপক সমিতি জুটা। উপচে পড়া সেই বৈঠকে একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, পড়ুয়াদের জন্য পৃথক হস্টেল, প্রতিটি হস্টেলের প্রতি ব্লকে ওয়ার্ডেন দিতে হবে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে এবং হস্টেলে নিরাপত্তার খাতিরে সিসিটিভি বসানোর বিষয়ে মতামত দেন শিক্ষকরা। পার্থপ্রতিম বলেন, ‘আমরা সার্ভেলেন্স চাই না। কিন্তু নিরাপত্তার খাতিরে কোনও স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে সিসিটিভি লাগানো যেতেই পারে।’

JU Student Death: প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুতে র‌্যাগিংই কারণ? যাদবপুরের অধ্যাপকের পোস্টে চাঞ্চল্য
গত কয়েক দিন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন না। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জুটার দাবি, তিনি একেবারেই দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছেন। অত্যন্ত অসংবেদনশীল কাজ করেছেন। এ দিন ছুটি কাটিয়ে স্নেহমঞ্জু অবশ্য কাজে যোগ দিয়েছেন। পরে স্নেহমঞ্জু জানান, তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন বলেই ক্যাম্পাসে ঘটনার পর পর আসতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই মঙ্গলবারই মেডিক্যাল লিভ নিয়েছিলাম। চিকিৎসকের কথায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম বলেই ফোন বন্ধ ছিল।’ এর পর স্নেহমঞ্জু কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমি মর্মাহত। কোনও মায়ের কোল খালি হোক চাই না।’

Jadavpur University Student Death: ‘ফোনে বলেছিল অনেক কিছু বলার আছে…’, যাদবপুরে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ পরিবারের
এ দিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র‌্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণ দর্শাতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ় করা হয়েছে। বিবৃতি জারি করে সে কথা জানিয়েছে কমিশন। অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট র‌্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র‌্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে র‌্যাগিং চলেছে। প্রথম বর্ষের নতুন ছাত্রছাত্রীরা র‌্যাগিংয়ের কারণে আতঙ্কিত। কেন নিয়ম মানা হল না? দু’দিনের মধ্যে যাদবপুরকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

Jadavpur University Ragging Case : ‘র‌্যাগিং’-এর ভিডিয়ো ভাইরালের হুমকি, মোবাইলে পৃথক ফোল্ডার! সৌরভের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য
পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে পৃথক নোটিস পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। স্বতঃপ্রণোদিত এই নোটিসে কমিশন জানায়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, ঘটনার আগে ডিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মৃত ছাত্রের সহ-আবাসিকেরা। কিন্তু তাঁদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষণ, সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যে উঠে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাজ এবং দায়িত্বে অবহেলার কথা। যেখানে এক জন তরুণ ছাত্রের র‌্যাগিংয়ের আতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে। নোটিসে লেখা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের এই সমস্ত খবর যদি সত্যি হয়, তাতে পরিষ্কার যে ছাত্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।

SFI on Ju Student Death : ‘ওঁকে দায়িত্ব নিতে হবে…’, যাদবপুরের ঘটনায় SFI-এর নিশানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার
এর আগেই ইউজিসি যাদবপুরের থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল। আগামী বুধবার তারা ক্যাম্পাসেও আসছে। সোমবার রিপোর্ট পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার পরেই ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর চিকিৎসারও বন্দোবস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। এর পর তাঁরা পুলিশে এফআইআর দায়ের করেন। কী ভাবে ওই ছাত্র হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলেন, তা জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউজিসিকে দেওয়া রিপোর্টে সেই কমিটির কথাও জানানো হয়েছে।

এ দিনই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকে বসে এই ঘটনায় গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটি। দীর্ঘ বৈঠকে তাঁরা এ দিন নানা ব্যক্তির জবানবন্দি নেওয়া হয়। ডেকে পাঠানো হয় হস্টেল সুপারকে। কথা বলা হয় ডিন অফ স্টুডেন্টসের সঙ্গে। আবাসিক কয়েকজন পড়ুয়া, ঘটনাস্থলে সেই রাতে যে সব শিক্ষকরা উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *