Calcutta High Court : ‘বাড়ির মেয়ে হলে এই সওয়াল করতে পারতেন’, প্রশ্ন কোর্টের – malda school girl mysterious death case family approaching in calcutta high court


অমিত চক্রবর্তী

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের জেরে প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে রাজ্য প্রশাসন থেকে রাজনীতি তোলপাড়। মালদার কালিয়াচকের স্কুলে বছর পাঁচেক আগে এক ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় সরকারিভাবে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ দায়ের হয়নি। কিন্তু সেখানেও স্কুলের হস্টেলের পাঁচতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মেয়ের রহস্যমৃত্যুতে খুনের অভিযোগই তুলেছিল পরিবার।

তারপরে পুলিশ, আদালতে অনেক দৌড়াদৌড়ি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে জানায়, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই ছাত্রী আত্মহত্যাই করেছে। যদিও তা কোনওভাবেই মানতে নারাজ পরিবার দ্বারস্থ হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। পুলিশ যে আত্মহত্যার তত্ত্বের কথা বলেছে, তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্টও। এই ঘটনায় পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হলেও তাতে রাজি নয় সরকার পক্ষ।

Jadavpur University : হস্টেলের বাপই শেষ কথা বলে! জুনিয়ররা যেন প্রজা
যদিও সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এটা যদি আপনার বাড়ির মেয়ের ক্ষেত্রে হতো, এভাবে সওয়াল করতে পারতেন?’ নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ায় আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর মালদার কালিয়াচকে একটি আবাসিক মিশনের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু হয়। স্কুলেরই অন্য এক অভিভাবকের মারফত মেয়ের মৃত্যুর কথা জানতে পারেন ছাত্রীর বাবা। ঘটনার আগের রাতে বাবার সঙ্গে ওই ছাত্রীর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, কোনও অজ্ঞাত কারণে হস্টেল কর্তৃপক্ষ মেয়েকে বাড়ি যেতে দেননি।

Uttar 24 Pargana : প্রাক্তন প্রেমিকার বাড়ির পিছনে যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ
এমনকী, বাবা হস্টেলে গেলেও মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেই রাতেই উপর থেকে পড়ে রহস্যমৃত্যু হয় কিশোরীর। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত করলেও পাঁচ বছর পরেও সুবিচার মেলেনি। পুলিশের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে জেলা জজের আদালতের দ্বারস্থ হয় কিশোরীর পরিবার। কিন্তু পুলিশি তদন্তেই ভরসা রাখে জেলা আদালত। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে কিশোরীর বাবা বাবা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ওই নাবালিকা ছাত্রী আত্মহত্যাই করেছে। তাই অন্য কোনও নিরপেক্ষ এজেন্সি বা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের প্রয়োজন নেই। আদালতে পুলিশের দাবি, মানসিক অবসাদের জন্যই ওই ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীর অভিভাবককে স্কুলে ডেকে পাঠানোর পরেই সে আত্মহত্যা করে।

IIT Kharagpur : আইআইটি খড়গপুরে ছাত্রমৃত্যু তদন্ত রায় চ্যালেঞ্জ মামলা: বিচারপতি মান্থার নির্দেশ বাতিল ডিভিশন বেঞ্চে
যদিও বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের পাল্টা প্রশ্ন, কী কারণে অভিভাবককে স্কুলে ডাকা হয়েছিল? তার তথ্য কোথায়? বিচারপতির আরও প্রশ্ন, চার্জশিট জমার সময়ে যাদের সাক্ষ্যগ্রহণ জরুরি ছিল, তাদের সাক্ষ্য কেন নেননি তদন্তকারী অফিসাররা? সেই প্রশ্নের সন্তোষজনক মেলেনি বলেই মনে করছে আদালত।

মৃতের পরিবারের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরীর প্রশ্ন, ‘পুলিশ তদন্ত করলেও প্রথম চার্জশিটে সাক্ষীদের নাম নেই কেন? নাবালিকা ছাত্রীর বাবা নির্দিষ্ট করে খুনের অভিযোগ করলেও, তা এফআইআর হিসেবে কেন গ্রহণ করা হয়নি?’ তাঁর অভিযোগ, ‘ওই ছাত্রী পাঁচতলা পড়ে যাওয়ার পর হাসপাতালে প্রথম যে চিকিৎসক তার চিকিৎসা করেছিলেন, তাঁর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। এতদিনেও মৃত ছাত্রীর বাবার জবানবন্দিও নেয়নি পুলিশ। তাহলে পুলিশের উপরে কীভাবে আস্থা রাখবে পরিবার?’

Ragging Case : বিশাখাপত্তনামের হস্টেলে মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই সাহা পরিবার
ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনার কথা বাড়িতে জানাননি। পড়ে যাওয়ার পরেও অনেকক্ষণ ছাত্রী জীবিত ছিল। তা সত্ত্বেও তার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। এলাকার এক প্রভাবশালীকে বাঁচাতেই পুলিশ দায়সারা তদন্ত করেছে বলে অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে পরিবারের তরফে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *