রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের টাকা ইতিমধ্যেই বন্ধ করেছে কেন্দ্র। একাধিক প্রকল্পে একাধিক শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। নতুন করে এবার অঙ্গনওয়াড়ির দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিকদের বেতনের টাকাও বন্ধ করা হল। রাজ্যের অন্তত দাবি তেমনই। গত ১লা অগাস্ট চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে কথা মানছেন রাজ্যের শিশু ও নারীকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। এই নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতিও দিয়েছেন তিনি। আর এরপর থেকে চিন্তায় পড়েছে অঙ্গনওয়াড়ির কাজে যুক্ত থাকা সমস্ত কর্মীরা। PSC-র মাধ্যমে কয়েক মাস আগেও নিয়োগ হওয়া ICDS সুপার ভাইজারদেরও চিন্তায় ঘুম উড়েছে। সদ্য যোগ দেওয়া চাকরিতে এমন একটি বিষয় উঠে আসায় স্বভাবতই তাঁরাও চিন্তিত।
করোনা পরিস্থিতির পর ২০২২ সাল থেকেই পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। মূলত, এই কেন্দ্রগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা, সদ্য মা হয়েছেন এমন মহিলা এবং শিশুদের দেওয়া হয় পুষ্টিকর খাবার। রাজ্য প্রশাসনের খবর অনুযায়ী, রাজ্যে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৮১। প্রতি কেন্দ্রে একজন করে কর্মী ও সহায়িকা থাকেন। জেলায় DPO, CDPO এবং সুপারভাইজাররা থাকেন। এর আগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বরাদ্দ সামগ্রীর উপরেও কেন্দ্রের কোপ পড়েছিল। এবার সরাসরি বেতনের উপর খাঁড়া নেমে এল।
বিধানসভাতেই মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যে যুক্ত ৫০৫৩ হাজার সুপারভাইজার, ৫৭৬ জন CDPO এবং ২৩ জন DPO-র বেতনের ২৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার দিত। নিয়মই ছিল তাই। এই আগস্ট থেকে রাজ্যগুলিকে এই খাতে টাকা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাজ্য সরকারের উপর বছরে ৮১ কোটি টাকার আর্থিক দায় চাপবে। পরে বিধানসভার লবিতে সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানিয়েছেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও গর্ভবতীদের জন্য খাদ্য বাবদ টাকাও ৩ মাস দেয়নি কেন্দ্র। সবে টাকা পাঠানো হয়েছে। এই টাকা না পাওয়ার জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
স্বাভাবিকভাবেই সকলের মনেই প্রশ্ন উঠেছে, কর্তা-কর্মীদের মাইনে সময়ে হবে তো? যাঁরা আগামী কিছুদিনের মধ্যে ব্লকে পোস্টিং পাবেন সেই সব সুপার ভাইজারদেরই বা কী হবে? এ ব্যাপারে এই সময় ডিজিটালের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল শশী পাঁজার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অগাস্ট মাস থেকেই মাইনে দেবে না বলে কেন্দ্র জানিয়েছে। সরকারি অফিসারদের বেতন বন্ধ করছে ভাবা যায়! রাজ্য তো কাউকে বঞ্চিত করতে পারে না। রাজ্য থেকেই টাকা দেওয়া হবে। অথচ এটাকে যৌথ প্রকল্প বলা হয়। তবে রাজ্যের কোনও কর্মীর উপরে আমরা কোন আঁচ আসতে দেব না।’