পুজো মানে বাঙালির নতুন জামা কেনা মাস্ট। উৎসবের চারটে দিন নতুন জামা না হলে চলে! আর নতুন জামা নিয়ে মনোমালিন্যের কারণে ঝড়ে গেল একটি তরতাজা প্রাণ। নতুন জামা নিয়ে মন কষাকষির কারণে আত্মঘাতী দশম শ্রেণির ছাত্র। পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের পানবয়রা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পর উৎসবের দিনে গোটা গ্রামকে গ্রাস করেছে বিষাদ। বুক চাপড়ে কেঁদেই চলেছেন মৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা। চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না প্রতিবেশীরাও।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তমীর দিন পানবয়রা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। পুজোতে পরার জন্য দুই ছেলের জন্য জামা কিনে এনেছিলেন বাবা। সেই নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। মনোমালিন্য এমন জায়গায় পৌঁছয় যে রাগে-অভিমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় দশম শ্রেণির পড়ুয়া কার্তিক ঘোষ। তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে উদ্ধার করা হয়। তড়িঘড়ি কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসীরা। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মোবাইল কেনার টাকা না দেওয়ায় ক্ষোভ, মাকে শ্বাসরোধ করে খুন গুণধর ছেলের
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। মৃত পড়ুয়ার দেহ কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পডু়য়া শুশুনিয়া রানিবালা বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণির ছাত্র। গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে।

মৃত পডুয়ার পরিবার সূত্রে খবর, বাবার কিনে আনা জামাকাপড় নিয়ে কার্তিক ও তার ভাইয়ের মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। ভাইয়ের উপর হওয়া অভিমান থেকেই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি পরিবারের। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মৃত পড়ুয়ার বাবা অর্জুন ঘোষ বলেন, ‘আমি দুই ছেলের জন্যই জামাকাপড় কিনে এনেছিলাম। কী নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়, তা আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না। কিন্তু সেই কারণে আমার বড় ছেলে যে এমন ঘটনা ঘটাবে তা কী করবে বুঝব। জানতে পারলে হয়তো কিছু করতে পারতাম।’

পানবয়রা গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘দুই ভাইয়ের মধ্যে মিল ছিল। এই বয়সে মাঝে মাঝে ঝগড়া অশান্তি লেগেই থাকে। কিন্তু সেই কারণে পুজোর সময় কার্তিক এমন একটা কাণ্ড করব আমরা কেউ ভেবে উঠতে পারিনি। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যাকে কাল দেখলাম সে এখন আর বেঁচে নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *