মুড ডিজ়র্ডার বা হজমের গোলমাল, সারানোর দিশা দেখাবে গ্রাফোলজি – a special seminar was organized on sunday by calcutta institute of graphology the only centre for handwriting analysis in kolkata


কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়
এক কানে ফোন চেপে দ্রুত হাতে কিছু লিখছিল ক্লাস এইটের মেয়েটা। পাশে ওর মা দাঁড়িয়ে। অন্য পাশে দাঁড়িয়ে এক প্রবীণ খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করছিলেন মেয়েটির লেখার ধরনটা। কয়েক মুহূর্ত দেখে মেয়েটির কাছে নিয়ে গিয়ে জানতে চাইলেন সে সম্প্রতি কোনও মানসিক ধাক্কা খেয়েছে কি না। শুনলেন, বছর দুই আগে কোভিডে বাবা মারা যাওয়ার ধাক্কা সে কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পরিচয় দিয়ে ওই প্রবীণ জানালেন, তিনি হাতের লেখা বিশ্লেষণ করতে পারেন। মেয়েটির হাতের লেখার ধরন দেখে তাঁর মনে হয়েছে সে অ্যাংজ়াইটি ডিজ়র্ডারে ভুগছে। দ্রুত কোনও মনোবিদের কাছে না গেলে সমস্যা হাতের বাইরে চলে যাবে।

শুধু অ্যাংজ়াইটি ডিজ়র্ডার নয়, মুড ডিজ়র্ডার, ম্যানিয়া, হাইপোম্যানিয়া-সহ নানা ধরনের মানসিক অবসাদ, ডিসথাইমিয়া, আতঙ্ক বা ফোবিয়া, প্যানিক ডিজ়র্ডারের মতো ২০ রকমের মানসিক সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপ, ক্লান্তি, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, পিঠের ব্যথা, হজমের গোলমাল, গাঁটের ব্যথা, স্ত্রীরোগ-সহ ২৭ রকমের অসুখ ধরা পড়ে হাতের লেখা দেখে।

কলকাতায় হাতের লেখা বিশ্লেষণের একমাত্র কেন্দ্র, কলকাতা ইনস্টিটিউট অফ গ্রাফোলজির উদ্যোগে রবিবার বিশেষ একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল। সভায় ঘোষণা করা হয়, এই প্রথম গ্রাফোলজিকে দেশে সায়েন্টিফিট প্রজেক্টিভ টুলের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই বিদ্যার প্রয়োগে বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক সমস্যা চিহ্নিত হয়। ওই সমস্যাগুলোর অনেকগুলো সারানোর ক্ষেত্রেও হাতের লেখা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।

নীলাঞ্জনা বলেন, ‘এখনও আমাদের দেশে গ্রাফোলজিকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা শুরু হয়নি। তবে এই বিদ্যার মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু হাতের লেখা নয়, আমি তো মনে করি চিত্রশিল্পীরা ছবি আঁকার সময়ে যে রং ব্যবহার করেন বা ছবিতে তাঁদের তুলির টান থেকেও তাঁদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু জানানো সম্ভব।’

কলকাতা ইনস্টিটিউট অফ গ্রাফোলজির কর্ণধার মোহন বসু তাঁর সদ্য প্রকাশ হওয়া বই, ‘গ্রাফোলজি অ্যাজ় এ সাইকোডায়াগনস্টিক টুল’ নামের বইটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি ১৮ বছর ধরে এই বিষয়ে গবেষণা করছি। হাতের লেখায় কোন ধরনের বৈশিষ্ট্য বা কোন ধরনের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে, সেই বিষয়ে আমি জানানোর চেষ্টা করেছি। আমরা, গ্রাফোলজিস্টরা সব সময়েই চেষ্টা করি মানুষের কাজে লাগতে। আগামী দিনেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *