এই পরিস্থিতিতে বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে ‘ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার অ্যাসোসিয়েশন’। কলকাতার রাস্তায় ট্রাম ফেরাতে হাইকোর্ট যে কমিটি তৈরি করেছে, তার দুই সদস্য ট্রাম তুলে দেওয়া নিয়ে এদিন একাধিক অভিযোগ করেছেন। বৈঠকে ছিলেন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, টাউন প্ল্যানার দীপঙ্কর সিনহা, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, পরিবেশ কর্মী অজয় মিত্তল।
বিষয়টি বিচারাধীন মেনে নিয়েই সকলের বক্তব্য, কলকাতার রাস্তা থেকে ট্রাম তুলে দেওয়া কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানানোর পাশাপাশি প্রয়োজনে গণ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে গঠিত কমিটিতে রয়েছেন ‘ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য ও দীপঙ্কর সিনহা।
এদিন বৈঠকের শুরুতেই তাঁরা জানিয়ে দেন হাই কোর্টের নির্দেশের পরে কমিটি বৈঠক করেছে। কিন্তু সেই বৈঠকের আলোচনার বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাননি তাঁরা। দেবাশিসের অভিযোগ, কলকাতা পুলিশ বারবার বিভিন্ন সময়ে শহরের ট্র্যাফিক দুর্ঘটনা নিয়ে কাঠগড়ায় তুলেছে ট্রামকে। কিন্তু তাঁদের আরটিআই-এর উত্তরে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাম লাইনের জন্য গত ১০ বছরে মাত্র একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে শহরে।
আর অন্য কারণে কত দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার কোনও তথ্য দেয়নি তারা। ট্রাম লাইনের জন্য বাস বা অন্য যান চলাচলে কী অসুবিধা হচ্ছে, সেই প্রশ্নেরও কোনও সদুত্তর কলকাতা পুলিশ দেয়নি। গৌতম ঘোষ বলেন, ‘কলকাতার সঙ্গে ট্রাম অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। শহরের রাস্তা থেকে ট্রাম তুলে দেওয়া মানে তা তিলোত্তমার অঙ্গহানি। দেশের অন্য কোনও রাজ্যে আর ট্রামের অস্তিত্ব নেই। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব, যাতে শহরের রাস্তায় ট্রাম স্বমহিমায় থাকে।’
সেলিমের কথায়, ‘২০১১ সালে কলকাতায় ৪০টি রুটে ট্রাম চলত। বর্তমানে পুরসভা চারটি রুটে ট্রাম চালানোর কথা বললেও আদতে চলছে একটি মাত্র রুটে। তাও সেটি জয়রাইড হিসেবে চলছে। আমরা জয়রাইড চাই না। কলকাতার রাস্তায় পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ট্রাম থাক।’ তবে ২০০০ সালের তুলনায় ২০১১ সালে ট্রামের রুটের পাশাপাশি শহরে ট্রামের সংখ্যা কেন কমে গিয়েছিল, তার কোনও সন্তোষজনক উত্তর তিনি দেননি।
দীপঙ্কর বলেন, ‘বাগানো গোরু ঢুকছে বলে আমরা কি বাগানের সব গাছ কেটে ফেলব, নাকি গোরু ঠেকাব। ট্রামের ক্ষেত্রে আমরা সেটাই করছি। ট্রাম যে কোনও ভাবে শহরের যান চলাচলে বাধা তৈরি করছে না। তার প্রমাণ আমরা কোর্টে দিয়েছি।’