কিন্তু, ওই সময় মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় জেলা প্রশাসন মেলার অনুমতি দিল না। সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা মেলা কমিটি, শিবপুর ক্লাব,বাঁশবেড়িয়া পুরসভা,দমকল,স্বাস্থ্য, পুলিশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে মেলা পরিচালন সমিতিকে জানিয়ে দেওয়া হয় মেলার অনুমতি দেওয়া আপাতত যাবে না।
মহকুমা শাসক জানান,কুম্ভ মেলা গত দু’বছর হয়েছে। কিন্তু, অনেক দিন আগে এই মেলা হত তার কোনও পূর্ব ইতিহাস নেই। সর্বোপরি মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে সেই সময়। নিরাপত্তা,দমকলের ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমস্যা হতে পারে। তাই মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
যে মাঠে মেলা বসে সেই শিবপুর স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘গত দু’বছর জোর করে এই মেলা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি ক্লাবের তরফে। আমরা এই মাঠে শুধু খেলোয়াড় তৈরি করতে চাই। মিলন মেলা হয় ফান্ডিংয়ের জন্য। আমরা মহকুমা শাসককে বলেছি মেলা অন্যত্র হোক।’
বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারপারসন শিল্পী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মাধ্যমিকের সময়ে কুম্ভমেলা হওয়ার কথা ছিল। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে এবার কুম্ভমেলা স্থগিত রাখা হল। সকলের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’ মেলা পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রীতম সরকার জানান,প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত সোমবার জানানো হবে। মেলা হচ্ছে না জানিয়ে দেওয়া হলেও রবিবার সকালে দেখা যায় মেলার ব্যানার টাঙানো হচ্ছে শিবপুর মাঠের সামনে।
দু’বছর আগে ত্রিবেনীতে শুরু হয় কুম্ভমেলা। মেলার উদ্যোক্তারা একে ‘মিনি কুম্ভমেলা’ বলে অভিহিত করেন। উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা,যমুনা ও সরস্বতী নদীর ত্রিবেণী সঙ্গমে এলাহাবাদে বারো বছর অন্তর হয় কুম্ভমেলা। ত্রিবেণীতেও রয়েছে সেই তিন নদীর সঙ্গম। এই জায়গাও সাধু-সন্তদের কাছে পবিত্র জায়গা।
কিন্তু, হঠাৎ করে ত্রিবেণীতে কুম্ভ মেলা কেন?মেলা পরিচালনা করেন যারা তারা মনে করেন পায়ে হেঁটে কুম্ভমেলায় যাওয়ার সময় অনেক সাধু ত্রিবেণীতে বিশ্রাম করেন। স্নান করে, পুজো পাঠ হোম যজ্ঞ করতেন। তাই ত্রিবেণী হয়ে উঠত ‘মিনি কুম্ভ’। বাঁশবেড়িয়া ত্রিবেণী অঞ্চলে বেশ কয়েকটি স্কুল আছে সেখানে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়। মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। ই পরীক্ষার সময় এই মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে।
বিজেপি হুগলি জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউয়ের দাবি, ‘কুম্ভমেলায় অনেক বিজেপি নেতৃত্ব যুক্ত। গতবার সুকান্ত মজুমদার এসেছিলেন। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগে ভয় পেয়ে এই মেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেলার দিন অনেক আগে থেকেই ঠিক হয়ে থাকে। মাধ্যমিক পরীক্ষা কেবলমাত্র অজুহাত।’