এর পরেই সন্দীপ বিশ্বাস, শুভম রায়, কবিরুল আলি ও আকাশ ধর নামে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরমধ্যে সন্দীপের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বিধানপল্লিতে, বাকি তিনজন বারাসতের বাসিন্দা। আরপিএফ আধিকারিকের ইউনিফর্মে থাকা শুভমের কাছ থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল ও ২ রাউন্ড কার্তুজ সমেত একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কবিরুল ও আকাশের কাছ থেকে মিলেছে বেশ কিছু নকল নথিপত্র, স্ট্যাম্প ও ভুয়ো পরিচয়পত্র। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গাড়িটিও। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এর সঙ্গে বড় কোনও চক্র জড়িত। হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ বাকি ব্যবস্থা নেবে।’ রবিবার সকালে ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হলে তাদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় পালসিট টোল এলাকায় ঘটনার সময় শুভম রায়ের পরনে ছিল আরপিএফ আধিকারিকের পোশাক। বাকিরা ছিল সাধারণ পোশাকে। মেমারি থানায় আনা হলে তাদের মধ্যে সন্দীপ বিশ্বাস পুলিশকে জানায়, সে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ট্র্যাফিক (আইআরটিএস) অফিসার। এই পদ আইএএস পদমর্যাদার সমতুল্য।
তদন্তকারী অফিসার সন্দীপকে স্যার বলে সম্বোধন করে থানার একটি চেয়ারে বসান। সূত্রের খবর, তখনই সন্দীপ রীতিমতো হুমকির সুরে জানতে চায়, তাকে এ ভাবে কেন বসিয়ে রাখা হয়েছে। কিছুটা সময় পর পুলিশের দেওয়া চা খায় সন্দীপ ও তার সঙ্গীরা। পরে থানার ওসি দেবাশিস নাগকে ঘটনার কথা জানান তদন্তকারী অফিসার। সন্দেহ হওয়ায় ওই চারজনের পরিচয়পত্র দেখতে চান ওসি। পুলিশ এর পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, রেল আধিকারিক পরিচয় দেওয়া ওই চারজনই ভুয়ো। এদের কাজ প্রতারণা করা।
এর পরে ধৃতদের তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজের পাশাপাশি পুলিশ বেশকিছু নকল নথিপত্র, স্ট্যাম্প ও ভুয়ো পরিচয়পত্র উদ্ধার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের দোষ স্বীকার করার পরেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এই চক্রে আরও কারা জড়িত রয়েছে তা খতিয়ে দেখার পাশপাশি কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র শুভমের কাছে এল তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। সূত্রের খবর, শুভম পুলিশকে জানিয়েছে, আরপিএফের ইউনিফর্ম ও আগ্নেয়াস্ত্র তাকে দিয়েছিল সন্দীপ। আরপিএফের চাকরি করে দেওয়ার জন্য সন্দীপ তার থেকে টাকাও নিয়েছিল বলে দাবি শুভমের।