চালকের সাফ জবাব, অটো আমার, নিয়মও আমার! বাধ্য হয়েই তিন যাত্রী নেমে সিটি সেন্টার থেকে আর একটি অটোয় রওনা দেন করুণাময়ী। ২০ টাকার জায়গায় তাঁদের গুণতে হয় আরও ১০ টাকা। উল্টোডাঙা-করুণাময়ী রুট শুধু নয়, অভিযোগ, ইচ্ছেমতো রুট কেটে অটো চালাচ্ছেন সল্টলেক অঞ্চলে চালকদের একাংশ।
যার জেরে প্রতিদিনই অনেক টাকা গচ্চা যাচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, সল্টলেকে মোট ১৫০০ হাজার অটো চলে। এর মধ্যে করুণাময়ীর অটোস্ট্যান্ড থেকে সাতটি রুটে অটো চলে। করুণাময়ী-ফুলবাগান, করুণাময়ী-পরিবেশ ভবন মোড় ছাড়া বাকি ৫ রুটেই অটোচালকরা খেয়ালখুশি মতো রুট ভাঙছেন বলে অভিযোগ। প্রতিদিন ৪০০-৬০০ টাকা অতিরিক্ত হাতে আসছে চালকদের।
যেহেতু মূল সল্টলেকে বাসের সংখ্যা এখনও পর্যাপ্ত নয়, সে কারণেই বাধ্য হয়ে অটোর এই দাদাগিরি সহ্য করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
উল্টোডাঙা থেকে কর্মসূত্রে সল্টলেকে যান যে সব যাত্রী, অটোর এই দৌরাত্ম্য নিয়ে তাঁরা গত অগস্টে পরপর দু’বার বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন উল্টোডাঙা স্টেশনের সামনে।
তাঁদের অভিযোগ ছিল, যে অটোর যাওয়ার কথা উল্টোডাঙা থেকে করুণাময়ী, সেই অটো সিটি সেন্টারের বেশি যায় না। বিকাশ ভবনের কর্মী বিকাশ হাজরার বক্তব্য, ‘অফিস টাইমে করুণাময়ী রুটের অটো সেক্টর-৫ ছাড়া যাত্রী নিতে রাজি হয় না। একটু বেলার দিকে সেক্টর-৫ যাওয়ার কথা বললেই রিজার্ভে অথবা করুণাময়ী পর্যন্ত যাওয়ার কথা বলেন অনেক চালক।’
যাত্রীদের এই বিক্ষোভের পর কাটা রুটের দৌরাত্ম্য বন্ধে পুলিশের তরফে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। কিন্ত কয়েক দিন অভিযানের পরেই তা বন্ধ হওয়ায় চালকরাও ফিরেছেন নিজমূর্তিতে। কেন কোনও ব্যবস্থা নেয় না পরিবহণ দপ্তর? দপ্তরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘রুটের পারমিট দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। তবে দেখার দায়িত্ব পুলিশের।’
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তাদের কিন্তু দাবি, ‘পরিবহণ দপ্তরের ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা নেই, এটা ঠিক নয়। মোটর ভেহিকেলস ইনস্পেক্টরা রয়েছেন। তবুও আমাদের তরফে মাঝেমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’ কী বক্তব্য ইউনিয়নের?
সল্টলেকের তৃণমূল পরিচালিত অটো ইউনিয়নের নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘সল্টলেকে যে দেড় হাজার অটো চলে তার মধ্যে মাত্র ৭০০ ইউনিয়নের আওতায়। বাকিদের উপরে নিয়ন্ত্রণ নেই। বিপুল সংখ্যক অটোর উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখাও ইউনিয়নের পক্ষে সম্ভব নয়।’