এই সময়: এতদিন সাইবার ক্রাইমের ক্ষেত্রে মূলত জামতাড়ার নাম শোনা যেত। এবার এরাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন পাচারেও নাম জড়ালো সেখানকার সাইবার অপরাধীদের। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

ব্রাত্য সেখানে বলেন, ‘প্রত্যেক বারই মোবাইলে প্রশ্নের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হতো। আমরা এবার পরীক্ষার আগে ২০ বার বৈঠকের করে প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিই। যারা এ সব করেছে, তারা স্টুডেন্টস নয়।’ মন্ত্রীর পাশে বসা রামানুজ বলেন, ‘বাইরের একটা চক্র বা গ্যাং আছে।’

ব্রাত্য সে সময়ে জানান, জামতাড়া গ্যাংয়ের মতো চক্র কাজ করেছে। এখানেই শেষ নয়। মন্ত্রী এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁস রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর ছিলাম। অসাধু চক্র এই কাজকর্ম করছিল। মালদায় বর্ডার আছে। বাইরের গ্যাং থাকতেই পারে। পুলিশ তদন্ত করছে।’ ব্রাত্য জানান, পর্ষদ যদি লিখিত ভাবে কোন কোন কোচিং সেন্টার আছে, তার তালিকা দেয়, তা হলে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে এ রকম ঘটনা আমরা একেবারে বন্ধ করে দেব। তাঁর দাবি, ভিতরে কোনও পরীক্ষার্থী উপকৃত হচ্ছিল না।

এই চক্র সক্রিয় কেন?
ব্রাত্যর জবাব, ‘টাকা বড় ফ্যাক্টর। ওরা দেখাতে চাইছিল, আমরা প্রশ্ন বিক্রি করি। তোমরা আমাদের কাছে প্রশ্ন পাবে। একইসঙ্গে সরকারকে বদনাম ও কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা।’ পর্ষদ সভাপতি জানান, মূলতঃ মালদা জেলার কয়েকটি স্কুলেই এই সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তা হলে কী উচ্চ মাধ্যমিকের মতো মালদার ওই সব স্কুলেও হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে?

ব্রাত্যর কথায়, ‘আমরা ছাত্রছাত্রীদের বারবার মোবাইল ফোন নিয়ে স্কুলে যেতে বারণ করেছি। তারপরেও ওরা মোবাইল নিয়ে স্কুলে যাবে কেন? উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীও কম। ছাত্রছাত্রীদের ধরতে আমাদের ভালোও লাগে না। এ বার যারা প্রশ্নের ছবি তুলেছিল, তাদের প্রত্যেকে ধরা গিয়েছে।’

শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘এ বার মোট ৩৬ জনের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। কিউআর কোড ব্যবহার করে দ্রুত তাদের ধরাও হয়েছে।’ সাংবাদিকদের রামানুজ জানান, মালদা থেকে ২৩ জনকে বাতিল করা হয়েছে। ৩৭টি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এরপরেই ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে ব্রাত্যর আর্জি, ‘ভুয়ো ও অসাধু চক্রের পাতা ফাঁদে তোমরা পা দেবে না। প্রশ্ন নিয়ে এ বছর কোনও অভিযোগ ছিল না। আগামী বছরও স্টুডেন্টস ফ্রেন্ডলি হবে। ভালো করে প্রস্তুতি নিলে পরীক্ষা ভালো হবে।’

Madhyamik Exam: নকল রুখতে গিয়ে হাত ভাঙল স্যরের!

মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে বিজেপি দুর্নীতির যে অভিযোগ এনেছিল, এদিন নথি ও পরিসংখ্যান দিয়ে তা খারিজ করে দেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ। তিনি বলেন, ‘১৯৯৭ সালে পরীক্ষার্থী পিছু ৯৭ টাকা খরচ হতো। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা। অর্থাৎ, ২৫ বছরে ১০৫ টাকা বেড়েছে। ১৯৯৫ সালে কাগজের রিলের দাম ছিল ৮০০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে, ৪৩৪০টাকা।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি। যদিও ১৪ ফেব্রুয়ারি পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন উপলক্ষ্যে রাজ্য সরকারের ছুটি থাকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *