কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়

ফুলে গন্ধ নেই, বিশেষ করে গোলাপে! ভাবতে না-পারলেও সেটাই কঠিন বাস্তব। ১৮ ইঞ্চি দীর্ঘ ডাঁটির যে কোনও জায়গা নিশ্চিন্তে খামচে ধরাও যাবে — এই গোলাপে কাঁটাও যে নেই। গোলাপ যেন পুরোটা না-ফোটে। ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টকটকে গাঢ় লাল আধফোটা গোলাপটা তুলে দিতে হবে প্রেমিকার হাতে। সকালে দেখা করতে আপনি একটুও দেরি করেননি। তবু প্রেমিকার ছদ্ম অভিমানের শেষ নেই।

একরাশ বিরক্তি দেখিয়ে যেন নিতান্ত অনিচ্ছাতেই প্রেমিকের হাত থেকে গোলাপটা টেনে নেবেন উনি। আর সেই সময়ে যেন গোলাপের শক্ত কাঁটার খোঁচা প্রেমিকার আঙুলে না-লাগে, সেটাও নিশ্চিত করেছেন ফ্লোরিকালচারিস্টরা। নাম গোলাপ হলেও তাতে কাঁটা থাকবে না একটুও!

কাল, বুধবার ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র মুখে আপাতত এমন গোলাপেরই চাহিদা বাংলা জুড়ে। না-ই বা থাকুক সে গোলাপের তেমন সুবাস।
প্রথম কবে কোন জন তাঁর প্রেমিকার হাতে লাল গোলাপ তুলে দিয়ে প্রেম নিবেদন করেছিলেন, ইতিহাস তার খোঁজ রাখেনি। কিন্তু গোলাপ যবে থেকে প্রেম নিবেদনের মাধ্যম হয়েছে, তখন থেকেই লাল রংয়ের প্রতি প্রেমিক-প্রেমিকাদের দুর্নিবার আকর্ষণ। এবং তা এখনও একটুও ফিকে হয়নি বলেই জানাচ্ছেন গোলাপ বিশেষজ্ঞদের দল।

বেঙ্গল রোজ় সেসাইটির যুগ্মসচিব সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘গোলাপ যে কত রংয়ের হয়, তার কোনও লেখাজোকা নেই। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস পড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে লাল গোলাপের চাহিদা এবং বিক্রির ধারে কাছে অন্য কোনও রংয়ের গোলাপ আসে না।’ সঞ্জয়ের কথায়, ‘২০২৪-এ দাঁড়িয়ে আমরা বলতে পারি বোর্দো, টপ সিক্রেট, হটশট, ফার্স্ট রেডের মতো প্রথম সারির কমার্শিয়াল ভ্যারাইটির গোলাপের চাহিদা এই সময়ে তুঙ্গে ওঠে। তা ছাড়া, জুমেলিয়া, নারাঙ্গা, রকস্টার এবং হোয়াইট, পিঙ্ক আর সুইট অ্যাভালাঁশের মতো প্রজাতির গোলাপের চাহিদাও বাড়ে।’

এক ক্লিকেই বাজিমাত… রোজ় ডে-তে রেকর্ড সেল ই-গোলাপের!

তবে এ বছর বিশেষ এক ধরনের ভাইরাসের প্রভাবে ফুলগুলো ঠিকমতো ‘খেলতে পারছে না’। শিখরপুরের সুজিত মণ্ডলের গোলাপ যেমন। তিনি ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র জন্য গোলাপ ফলানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন কয়েক মাস আগে। কিন্তু এখন? অনেকটা মনখারাপ নিয়ে সুজিতবাবু বলছেন, ‘চাহিদা থাকে আধফোটা ফুলের। কিন্তু ভাইরাসের প্রভাবে ফুলগুলো ওই অবস্থাতেই ঝরে যেতে শুরু করেছে। রংয়ের জেল্লাও যেন কিছুটা কম!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *