ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শিশুটির মা ও পিসি উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা থানা এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্তদের সঙ্গে সংগঠিত শিশুপাচার চক্রের যোগ রয়েছে নাকি স্রেফ আর্থিক অনটনের কারণে শিশুটিকে অন্য পরিবারে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গত সপ্তাহেই মেদিনীপুরে সদ্যোজাতকে বিক্রির অভিযোগ ওঠে মায়ের বিরুদ্ধে। এ বার ফের একই ধরনের অভিযোগ উঠল মালদায়।
সদ্যোজাতের বাবা-মা দু’জনেই ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। সম্প্রতি মহিলার স্বামী আরও একটি বিয়ে করে অন্যত্র সংসার পাতেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ভিনরাজ্যে তিনটি সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে যাওয়ায় দিন চারেক আগে সন্তানদের নিয়ে ডালখোলায় ফিরে আসেন মহিলা। ট্রেনে তাঁর সঙ্গে এক নিঃসন্তান দম্পতির পরিচয় হয়। অভিযোগ, সেখানেই ঠিক হয় সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে ওই দম্পতির কাছে দিয়ে দেবেন তিনি।
সেই মতো দু’দিন আগে চাঁচল থানা এলাকায় ওই দম্পতির বাড়িতে যান তিনি। দরাদরির মাঝে লোক জানাজানি হয়ে যাওয়ায় পুলিশে খবর যায়। গ্রামবাসীদের কাছে অভিযোগ পেয়ে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে সদ্যোজাত শিশু-সহ মাকে আটক করে। এর পরে তদন্ত শুরু হয়। তাতেই ওই গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হয় ওই মহিলার ননদ অর্থাৎ শিশুটির পিসি। এছাড়া জাবেদা খাতুন নামে আরও এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জাবেদা পুখুরিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শিশুটির পিসি ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে এক দম্পতির কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা করেছিল। আর জাবেদা এই শিশু হস্তান্তরের খবর পেয়ে পুখুরিয়া থানা এলাকা থেকে পৌঁছে গিয়েছিল। সে সদ্যোজাতের মাকে বলে, এমন ‘লস’-এর ডিল না করতে। তার কথা শুনলে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে অন্য পরিবারে শিশুটিকে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে।
তদন্তে এ সব উঠে এলেও ধৃতরা এখনও আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেনি। শিশুটির মা ছাড়া অন্য দুই মহিলা বিশেষ করে জাবেদার ভূমিকা যথেষ্ট সন্দেহজনক মনে করছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘তদন্তে আরও এক পুরুষের উপস্থিতি নজরে এসেছে। যে চেন্নাইতে কাজ করে। তার খোঁজ চলছে।’
সব মিলিয়ে আর্থিক অনটনে সন্তান ‘হস্তান্তর’-এর এই ঘটনার তদন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে খুব নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা।