এই বিষয়ে আত্মীয় বৈষ্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন,’গৃহকর্তা গগন মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকে মানসিক অবসাদ তৈরী হয় পরিবারের। বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ করে দেন তাঁরা। কারও সঙ্গে যোগাযোগও ছিল না। মাস খানেক না খেয়েদেয়ে এভাবেই হয়ত পড়েছিলেন। আমাকে ফোন করে সৌরভ একদিন বলে, দাদা আমার শরীর খুব খারাপ। এক মাস আমরা কিছু খাইনি। একবার আসবে। আমি আসতে চাইলে বলে, আজ পূর্ণিমা, কাল এস। তা সত্ত্বেও আমি আসি। দরজা খোলে না। এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকি, তারপর কড়া নাড়ি। দরজা খুলেই বলে আর দু’দিন বাঁচব। আমি বলেছিলাম তুই মারা গেলে মা – বোনকে কে দেখবে?’
গত সোমবার আবার আসেন বৈষ্ণবদাস। দরজা বন্ধ থাকায় ভিতর থেকে সাড়া না পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পুলিশ ডাকেন চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাঁদের। বুধবার ভোর রাতে মৃত্যু হয় সৌরভের। তাঁর মা কিছুটা সুস্থ হলেও বোনের অবস্থা এখনও সংকটজনক।
সৌরভের মৃত্যুর খবর পেয়ে চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব ওই বাড়িতে যান। মৃতের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে হাসপাতালে পৌঁছন। শেষকৃত্যের যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। দিলীপ যাদব বলেন, ‘এই ধরনের মৃত্যুতে নিজেদের অপরাধী মনে হয়। আমাদের পাড়ার মানুষ, তাঁরা কতদিন বাড়ি থেকে বের হননি, খাননি, অসুস্থতা ছিল। কোনও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলেননি, কেউ জানতে পারেনি। সমাজে বা প্রশাসনের কারোও কাছে কোনও সাহায্য চাননি। এটা আমাদের কাছে খুবই কষ্টের। আমরা যখনই জানতে পেরেছি তারপরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’ গগন মুখোপাধ্য়ায়ের স্ত্রী এবং মেয়ে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেও আশাপ্রকাশ করেন চেয়রম্যান।
