ফোন আসছে হোয়াটসঅ্যাপে। কল আসার সময়ে মোবাইল স্ক্রিনে ফুটে উঠছে পুলিশের পোশাক পরা এক আধিকারিকের ছবি। এক জন পুলিশ আধিকারিকের ফোনে সন্তানদের মারাত্মক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা। সন্তানকে বাঁচাতে প্রতারকদের কথামতো তাদের অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন অনেকে।
এদিন সকালে দুর্গাপুর দমকল বিভাগের এক কর্মীকে ফোন করে প্রতারকরা। বলা হয় তাঁর মেয়ে ড্রাগস পাচার করতে গিয়ে পুলিশের হাত ধরা পড়েছে। ওই দমকল কর্মীর মেয়ে কলকাতায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়েন। ফোনে মেয়ের গলার আওয়াজও শোনানো হয়। মেয়ের কলেজের নামও সঠিক বলে দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই দমকল কর্মী। মেয়েকে বাঁচাতে প্রতারকদের দাবি মতো টাকা পাঠান তিনি। বলেন, ‘গুগল পে অ্যাকাউন্টে দু’বারে ৬২ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিই। পরে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। জানতে পারি, মেয়ে তখন কলেজে ক্লাস করছে। তখন বুঝতে পারি প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছি। পরে ওরা আরও কয়েকবার ফোন করেছিল কিন্তু, রিসিভ করিনি।
এর আগে দুর্গাপুরের আর এক বাসিন্দা প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। তাঁর ছেলে ভুবনেশ্বরের একটি কলেজে পড়ে। প্রতারকরা ফোন করে ওই ব্যক্তিকে বলে, তাঁর ছেলেকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফোন কেটে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে দেখেন মোবাইল স্যুইচ অফ। এতে ঘাবড়ে গিয়ে প্রতারকদের কথা মতো গুগল পে অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। ইতিমধ্যে ওই ব্যক্তির স্ত্রী কলেজের হস্টেল ওয়ার্ডেনকে ফোন করেন। ওয়ার্ডেন জানান, তাঁদের ছেলে ক্লাস করে হস্টেলে এসে ফোন স্যুইচ অফ করে ঘুমোচ্ছে। আশ্বস্ত হয়ে আর টাকা পাঠাননি ওই ব্যক্তি।
সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘এই প্রতারণা চক্রটি একেবারে নতুন। ওদের কাজের পদ্ধতিও আলাদা। সাত দিন আগে ওরা কাজ শুরু করেছে। এই চক্রের সঙ্গে জামতাড়া গ্যাংয়ের যোগ রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ অভিভাবকদের প্রতি ডিসি অভিষেক গুপ্তার পরামর্শ, ‘একদম আতঙ্কিত হবেন না। পুলিশ কখনও তাদের ছবি ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে টাকা চায় না। অভিভাবকদের বলব, সচেতন থাকবেন। এগুলো সব ফেক কল।’