লড়াইতে কারা?
এহেন লোকসভা কেন্দ্রটি ২০০৯ সাল থেকে নিজেদের দখলে রেখেছেন পদ্ম শিবির। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রাজু বিস্তা। ৭ লাখ ৫০ হাজার ৬৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন রাজু। এবার সেই রাজুর ওপরেই ফের একবার আস্থা রেখেছে বিজেপি। তাঁকেই আরও একবার ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। অন্যদিকে গোপাল লামাকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আবার মুণীশ তামাংকে প্রার্থী করা হয়েছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। তবে রাজনৈতিকমহল মনে করছে, এবারের দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র, বিশেষত পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ একেবারেই অন্যরকম। কারণ এর মাঝে, বহু রাজনৈতিক উত্থানপতনের সাক্ষী থেকেছেন এই লোকসভা কেন্দ্রের মানুষজন।
কে কার সঙ্গে?
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছিল বিমল গুরুং-এর দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তবে পরে একটা সময় বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে, তৃণমূলের হাত ধরেন গুরুং। কিন্তু সম্প্রতি ফের একবার এনডিএ শিবিরে গিয়েছেন তিনি। রাজু বিস্তার সঙ্গে প্রচারেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। অন্যদিকে আবার অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম পাহাড়ে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে। সমতলে অবশ্য দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূলই। এখানেই শেষ নয় হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ড সমর্থন দিয়েছেন কংগ্রেস তথা ইন্ডিয়া জোটকে। আবার একদা বিমল গুরুংয়ের সঙ্গী বিনয় তামাং বর্তমানে কংগ্রেসে থাকলেও দলীয় প্রার্থীর প্রচার থেকে নিজেকে দূরেই রেখেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এদিকে আবার রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন কার্শিয়াং-এর বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। অর্থাৎ সবদিক থেকে এই কেন্দ্রের রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল হয়ে উঠেছে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
এখনও গোর্খাল্যান্ডের দাবি
মনে রাখতে পাহাড়ের রাজনীতিতে বারেবারেই ঘুরেফিরে এসেছে পৃথক গোর্খল্যান্ডের দাবি। সেই দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন বিমল গুরুং। এমনকী এখনও নিজের দাবিতে অনড় তিনি। পাহাড়ের দীর্ঘদিনের দাবি বিজেপিই পূরণ করতে পারবে, এমনটা সম্প্রতিও বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে পাহাড়ে অনেকটাই জমি হারিয়েছেন গুরুং। সেক্ষেত্রে এই ভোটই হয়ত তাঁর কাছে ফিরে আসার শেষ সুযোগ। যদিও গুরুংকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজী নন অনীত থাপারা। উলটে পাহাড়ের ৩টি আসনে লিড দিয়ে কার্যত তৃণমূলের কাছে নিজেদের পয়েন্ট বৃদ্ধির চেষ্টাই তাঁরা করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে কংগ্রেসকে সমর্থনের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ে নিজের পায়ের তলার জমি ফের একবার মজবুত করতে চাইছেন অজয় এডওয়ার্ডও। সেক্ষেত্রে এবার দেখার পাহাড় তথা দার্জিলিং কেন্দ্রের লড়াইতে শেষ হাসি কার মুখে ফোটে।