কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। পুরো মামলা শোনা হবে বলে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। তবে, চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গে সিপিএম-বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, এই চাকরিবাতিলের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দুষলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সিপিআই(এম) নেতারা অপ্রয়োজনীয়ভাবে আইনি বাধা তৈরি করেছেন, যার ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাদের এই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করছে তাদের বন্ধু বিজেপি। একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দিচ্ছেন। অন্যদিকে, তারা (সিপিএম এবং বিজেপি) এটি কেড়ে নিচ্ছে।’ এর আগেও চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল রাজ্য সরকার। নিজের নির্বাচনী প্রচার থেকে একাধিকবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছে, চাকরিহারা প্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। একই সুরে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে সেই যোগ্য ব্যক্তিদের পাশে থাকব যাঁরা তাঁদের চাকরি হারিয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘যোগ্য প্রার্থীদের দুর্ভোগের জন্য শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করা যেতে পারে। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা চোখের জল ফেলতে বাধ্য হয়েছে, কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন। এসএসসি দ্বারা যোগ্য এবং অযোগ্যদের মধ্যে যে কোনও পার্থক্য দেখানো হলে তো অপরাধ স্বীকার করা হত।’

পালটা, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে CBI তদন্ত আপাতত স্থগিত।পরবর্তী শুনানি সোমবার। এখানে দ্বিচারিতা করছেন বিরোধী দল, বাম আইনজীবীরা। মুখে বলছেন যোগ্যদের চাকরি হোক। আদালতে গিয়ে গোটা প্যানেল বাতিল চাইছেন। তৃণমূল কংগ্রেস ভুল সংশোধন করে যোগ্যদের চাকরির পক্ষে। বিরোধীরা সব আটকে রাজনীতি করতে চায়।’

কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারাদের একাংশ। আজ, সোমবার এই মামলাটির শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় এদিন বলেন, ‘প্যানেলের বাইরে নিয়োগ করা হয়েছে। এটা তো সম্পূর্ণ জালিয়াতি।’ হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

SSC Scam Verdict:’চাকরিহারাদের সকলেরই কি বেতন ফেরত ?’রায় ব্যাখা বিকাশরঞ্জনের

যদিও, কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে ষড়যন্ত্রের দাবি করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। এই রায়ের পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের কয়েকদিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রাজ্যে ‘বোমা ফাটা’ নিয়ে একটি মন্তব্য করেন। সেই বিষয়টি টেনে এনে এই রায়ের বিরুদ্ধে সরব হয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

প্যানেল বাতিলে এখনই স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট, পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা চাকরিহারাদের
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের ওই রায়ের ফলে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যায়। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। অন্যদিকে, চাকরিহারা ‘যোগ্য’ প্রার্থীরা এই মুহূর্তে আন্দোলন শুরু করেছেন। তাঁদের যাতে চাকরি ফেরত দেওয়া হয়, সেই ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *