চাকরি বাতিলের হাইকোর্টের নির্দেশে এখনই কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার। এদিকে চাকরিহারাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এবার তাঁরা নিজেরাই দ্বারস্থ হচ্ছেন আদালতের।

কী বলছেন চাকরিহারার?

এই বিষয়ে স্বর্ণালী চক্রবর্তী নামে এক চাকরিহারা বলেন, ‘সোমবারের মধ্যে আমাদের নিজেদের একটি এসএলপি দায়ের করা হবে, আমরা নিজেরা মুভ করার চেষ্টা করব। দেখা যাক কী হয়, আমরা প্রধান বিচারপতির দিকে তাকিয়ে আছি। নিশ্চয় আমাদের সঙ্গে ভালো কিছুই হবে। আমরা কোনওভাবেই এর জন্য দায়ী নই।ট

অন্যদিকে জয়ীতা বসু নামে অপর এক চাকরিহারা বললে, ‘আমাদের মামলাটা তো খারিজ করা হয়নি। আমাদের মামলাটা হয়ত আজ-কালের মধ্যে হয়ে যাবে, তখন নিশ্চয় আমাদের বিষয়টা বিবেচনা করে দেখা হবে। কারণ ৬৫বি ধারায়, যে অযোগ্যদের চিহ্নিতকরণ হয়েছে তাতে যদি ওএমআর-কে অ্যাপ্রুভাল দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের ক্ষেত্রেও অ্যাপ্রুভাল দেওয়া হবে। খারিজ তো করে দেয়নি মামলাটা। মেরিট না থাকলে তো আজকেই শেষ করে দিতেন। মেরিট আছে বলেই সোমবার শুনবেন। আমরা আলাদা করে গেলে আশা করি সুপ্রিম কোর্ট আমাদের কথা বলার সুযোগ দেবেন।’

একইসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেও নিশাীনা করেন জয়ীতা। তিনি বলেন, ‘বিকাশবাবুকে তো বলার মতো ভাষাই নেই। বামফ্রন্ট কীভাবে এখনও বিকাশবাবুকে দলে রাখছে সেটাই…।’ বর্তমানে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতির জন্য বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেই দায়ী করলেন জয়ীতা।

গোটা প্যানেল বাতিল করেছে হাইকোর্ট

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে এসএসসি মামলার রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। রায়ে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে দেয় উচ্চআদালত। আর আদালতের এই রায়ে চাকরি হারান ২৫, ৭৫২ জন। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গোটা রাজ্যজুড়ে। একদিকে যেমন আদালতের রায়ের পর কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে চাকরিহারাদের। অন্যদিকে এই রায়ের বিরোধিতা করে এসএসসি ও রাজ্য সরকারও। রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্য শিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলারই শুনানি এদিন ছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।

এদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির কারসাজিতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও। এই পরিস্থিতিতে চাকিরহারাদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী হাইকোর্টের রায়কে ‘বেআইনি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মমতা। পালটা আবার তৃণমূল কংগ্রেস তথা রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে নিশানা করেছে বিজেপি। এক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। অযোগ্যদেক বাঁচাতে যোগ্যদের ‘বলি’ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু।

এদিকে যোগ্যদের সসম্মানে বিদ্যালয়ে পুনর্বহাল, যোগ্য বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের স্বচ্ছভাবে দ্রুত নিয়োগ, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারের পরিকল্পিত দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি, শিশুদের শিক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আজ সুবোধ মল্লিক স্কয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলে পা মেলান চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীসহ শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ। মিছিলের শেষে মুখ্যসচিবের উদ্দেশে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। একইভাবে এসএসসি চেয়ারম্যান এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির কাছেও চিঠি পাঠিয়ে অবিলম্বে সমস্যার সমাধানে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *