এই সময়, ভাঙড়: গরম থেকে বাঁচাতে স্কুল ছুটি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ সেই প্রবল গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই স্কুল ইউনিফর্ম পরিয়ে ভোট প্রচারে শিশুদের হাঁটানোর অভিযোগ উঠল শাসক দলের লোকজনের বিরুদ্ধে। কচি কচি পায়ে হাঁটল তারা।প্রচণ্ড গরমে এমনিতেই মানুষের অবস্থা খারাপ। তার মধ্যে তৃণমূলের ভোট প্রচারে স্কুল পড়ুয়াদের সামিল করা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে ক্যানিং পূর্বে। অভিযোগ, সোমবার সকালে পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুলের ইউনিফর্ম পরে এই গরমে ছোট ছোট পড়ুয়ারা হাঁটল কয়েক কিলোমিটার। ছোট ছোট বাচ্চাদের ‘মডেল’ হিসাবে ব্যবহার করেছেন জয়নগরের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডল ও ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। ভাঙড়ের বোদরা থেকে নিমতলা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয় ছোটদের। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পদযাত্রার মূল আয়োজক ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা।

দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলিকে প্রচারের হাতিয়ার করছে তৃণমূল। বিশেষ করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পগুলিকে প্রচারের প্রথম সারিতে রাখা হচ্ছে। অভিযোগ, সোমবার সকালে প্রখর রোদের মধ্যে সোনারপুর-ঘটকপুকুর রোডের বোদরাতে প্রতিমা মণ্ডলের সমর্থনে একটি বড় র‍্যালি করেন শওকত। সেই র‍্যালিতে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথীর মতো প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরতে স্কুলের বাচ্চাদের মডেল হিসাবে হাজির করানো হয়। তৃণমূলের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পদযাত্রায় অংশ নেয় খুদেরা। গরমের কথা মাথায় রেখে যখন রাজ্য সরকার পড়ুয়াদের বিশ্রাম দিতে স্কুল ছুটি দিয়েছে তখন কী ভাবে অমানবিকতার নজির দেখিয়ে এ ভাবে ছোটদের দিয়ে র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করানো হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

ঘটনার নিন্দা করে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প তো তৃণমূলের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। পরের টাকায় কিছু জনকল্যাণমূলক কাজ হয়। এই গরমের মধ্যেও স্কুলের বাচ্চাদের মিছিলে সামিল করার তীব্র নিন্দা করছি, বিষয়টি অমানবিক।’ আইএসএফের জেলা সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘অনুদান দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর রাজনীতি চলছে। স্কুলের বাচ্চাদের মিছিলে হাঁটানো গর্হিত অপরাধ। এখন থেকেই শিশু মনে রাজনীতি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীপ দাস বলেন, ‘এটা অমানবিক কাজ। তৃণমূল নেতারা নিজেদের বাড়ির বাচ্চাদের এই গরমে ঠান্ডা ঘরে রেখে দিয়েছে। গরিব বাড়ির বাচ্চাদের জোর করে মিছিলে হাজির করাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব বিষয়টি দেখার জন্য।’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ক্যানিং পূর্ব বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, ‘কোনও স্কুলের বাচ্চাকে মিছিলে সামিল করা হয়নি। টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে দু-একজন উৎসাহী বাচ্চা মিছিলে ঢুকে পড়েছিল।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *