২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৩ টি আসনে জয়ী হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অবশ্য তৃণমূল একাধিক উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে। গেরুয়া শিবির থেকে একাধিক বিধায়ক জোড়াফুলে চলে আসায় তৃণমূলের পরিষদীয় দলের শক্তি আরও বেড়ে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে সবুজ ঝড় বইলেও জোড়াফুল আলিপুরদুয়ার জেলাতে একটি বিধানসভাতেও লিড নিতে পারেনি। ২০১৯ সালের সাফল্য ধরে রাখতে না পারায় গেরুয়া শিবির হতাশার আবহেও ২০২১ সালের তুলনায় বেশি বিধানসভায় লিডকে ইতিবাচক চোখে দেখছে।
যদিও ২০১৯ সালে বিজেপি ১২১ টি বিধানসভা আসনে লিড নিয়েছিল। আলিপুরদুয়ার লোকসভায় জয়ী হয়েছেন বিজেপি-র মনোজ টিগ্গা। তিনি এখনও বিধানসভায় বিজেপির সচেতক। মনোজের কথায়, ‘২০২১ সালের তুলনায় এবার বেশি বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে এটা একটা ইতিবাচক দিক। দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং জেলায় আমরা সব বিধানসভায় লিড নিয়েছি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১৫ টি বিধানসভায় আমাদের লিড রয়েছে। নদিয়া জেলার ১১ টি বিধানসভায় আমরা এগিয়ে।’
গত ৪ জুন ফল ঘোষণার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট কাটাকাটি করায় রায়গঞ্জের মতো আসন বিজেপি পেয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছে, ২০২১ সালের তুলনায় বিজেপি কিছু বিধানসভায় এগিয়ে থাকলেও ২০২৬ সালের ফল অন্য হবে। লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় প্রেক্ষাপটের দিকে তাকিয়ে বহু মানুষ ভোট দেন। বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের সমীকরণের ভিত্তিতে ভোট হয়, তাই যে বিধানসভাগুলিতে বিজেপি লিড পেয়েছে, সেখানে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল অবশ্যই জয়ী হবে।
কিছু দিন পরেই বেশ কিছু বিধানসভার উপনির্বাচন রয়েছে সে সময়েই ট্রেন্ড স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য। দলের মুখপাত্র শান্তনু সেনের যুক্তি, ‘২০১১ সালে তৃণমূল পেয়েছিল ১৮৪ টি আসন, ২০১৬ সালে ২১১ টি আসন। ২০২১ সালে তৃণমূল পায় ২১৩টি আসন। বাম-কংগ্রেস শূন্য হয়ে যায়। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে বিজেপিতে যে কোন্দল শুরু হয়েছে এই দল ভোটে লড়াই করার জায়গায় থাকবে কি না সন্দেহ রয়েছে।’
তৃণমূল বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছে। কলকাতায় তৃণমূল ৯ টি বিধানসভায় এগিয়ে, বিজেপি এগিয়ে ২টি বিধানসভায়। উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূল ২৫ বিধানসভায় লিড নিয়েছে। বিজেপি এগিয়ে ৮ টি কেন্দ্রে। ২০২১ সালের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের সমর্থনে আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড়ে জয়ী হয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে বহু জায়গায় প্রার্থী দিলেও কোনও বিধানসভা লিড নিতে পারেনি আইএসএফ। এমনকী ভাঙড়েও নয়।