দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে কোমড়ে গোঁজা সার্ভিস রিভলভার বের করে একটি পোস্টের আড়ালে লুকিয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন ডাকাত দলের দিকে। একজন সেই গুলিতে আহত হয়ে আছাড় খেয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাত দলের বাকি সদস্যরাও বেরিয়ে এসে গুলি বর্ষণ করতে থাকে মেঘনাদের দিকে। পোস্টের আড়াল থেকে এক চুলও নড়েননি তিনি। অনবরত গুলি চালিয়ে ডাকাত দলের বাকি সদস্যদের ঘায়েল করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। সোনার দোকানের সামনে তখন একটা ছোটোখাটো ‘ব্যাটেল ফিল্ড’।
ডাকাত দলের লোকজন বুঝতে পারে আর কিছুক্ষণ এরকম চলতে থাকলে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে। একটি সার্ভিস রিভলভার নিয়ে সাতজনের সঙ্গে লড়াই করে যাওয়া ওই পুলিশকর্মীকে দমানো সহজ নয়। আহত ডাকাত দলের সদস্যকে চ্যাংদোলা করে বাইকে তুলে পড়ি কি মরি করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
অসীম সাহসী জামুরিয়া থানার শ্রীপুর পুলিশ আউটপোস্টের ওসি, সাব-ইন্সপেক্টর মেঘনাদ মণ্ডলকে ‘স্যালুট’ জানাল রাজ্য পুলিশ। রাজ্য পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক হ্যান্ডেলে পুলিশ আধিকারিকের সেদিনের লড়াইয়ের পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে লেখা হয়, ‘রোমহর্ষক সেই কাহিনি শুনতে চাওয়ার অসংখ্য অনুরোধ আসছে পরিচিতদের কাছ থেকে, আর মেঘনাদ এড়িয়ে যাচ্ছেন অল্প হেসে। অথবা বলছেন, আমি তো স্রেফ ডিউটি করেছি আমার। মেঘনাদকে নিয়ে কী আর লেখার? স্যালুট, স্রেফ স্যালুট!’
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের গিরিডি থেকে দু’জনকে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সুরজকুমার সিংহ বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। সোনু সিং নামে আরও একজনকে ধরা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে তার কোমরেই চোট লেগেছিল। আহত হওয়ায় বেশি দূর পালাতে পারেনি সোনু। কেননা, বিপদ রেখাটা আগেই টেনে রেখেছিলেন মেঘনাদ।