‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ শুধু সিনেমায় নয়, বাস্তবেও হয়। করে দেখালেন জামুরিয়া থানার শ্রীপুর পুলিশ আউটপোস্টের ওসি, সাব-ইন্সপেক্টর মেঘনাদ মণ্ডল। রানিগঞ্জে সোনার দোকানের সামনে ডাকাতদলের সঙ্গে মরণপণ লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। একদিকে, সাত সশস্ত্র ডাকাতের মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, অন্যদিকে পোস্টের আড়ালে দাঁড়িয়ে সার্ভিস রিভলভার দিয়ে একার লড়াই। একজনকে আহতও করলেন। তাঁর হাত থেকে বেঁচে লুঠের কিছু জিনিস ফেলে দিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে ডাকাত দল। অসীম সাহসী সেই সহকর্মীকে ‘স্যালুট’ জানাল রাজ্য পুলিশ।রানিগঞ্জ থানার তারবাংলা এলাকার কাছে একটি নামী সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। সেইসঙ্গে রাজ্যবাসী দেখল, এক পুলিশ কর্মীর সাহসের পরিচয়। ডাকাতির ঘটনাস্থলের থেকে কিছুটা দূরেই অন্য একটি দোকানে ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন মেঘনাদ। লোকজনের ছোটাছুটি দেখে বুঝতে পারেন সোনার দোকানে কিছু একটা হয়েছে।


দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে কোমড়ে গোঁজা সার্ভিস রিভলভার বের করে একটি পোস্টের আড়ালে লুকিয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন ডাকাত দলের দিকে। একজন সেই গুলিতে আহত হয়ে আছাড় খেয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাত দলের বাকি সদস্যরাও বেরিয়ে এসে গুলি বর্ষণ করতে থাকে মেঘনাদের দিকে। পোস্টের আড়াল থেকে এক চুলও নড়েননি তিনি। অনবরত গুলি চালিয়ে ডাকাত দলের বাকি সদস্যদের ঘায়েল করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। সোনার দোকানের সামনে তখন একটা ছোটোখাটো ‘ব্যাটেল ফিল্ড’।

Raniganj Dacoity : সোনার দোকানে ফিল্মি কায়দায় ডাকাতি, চলল গুলির লড়াই

ডাকাত দলের লোকজন বুঝতে পারে আর কিছুক্ষণ এরকম চলতে থাকলে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে। একটি সার্ভিস রিভলভার নিয়ে সাতজনের সঙ্গে লড়াই করে যাওয়া ওই পুলিশকর্মীকে দমানো সহজ নয়। আহত ডাকাত দলের সদস্যকে চ্যাংদোলা করে বাইকে তুলে পড়ি কি মরি করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

Raniganj Dacoity News : গুলিবিদ্ধ ডাকাতকে নিয়ে গাড়ি ছিনতাই, পালানোর সময় প্ল্যান বদল দুস্কৃতীদের, তারপর…
অসীম সাহসী জামুরিয়া থানার শ্রীপুর পুলিশ আউটপোস্টের ওসি, সাব-ইন্সপেক্টর মেঘনাদ মণ্ডলকে ‘স্যালুট’ জানাল রাজ্য পুলিশ। রাজ্য পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক হ্যান্ডেলে পুলিশ আধিকারিকের সেদিনের লড়াইয়ের পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে লেখা হয়, ‘রোমহর্ষক সেই কাহিনি শুনতে চাওয়ার অসংখ্য অনুরোধ আসছে পরিচিতদের কাছ থেকে, আর মেঘনাদ এড়িয়ে যাচ্ছেন অল্প হেসে। অথবা বলছেন, আমি তো স্রেফ ডিউটি করেছি আমার। মেঘনাদকে নিয়ে কী আর লেখার? স্যালুট, স্রেফ স্যালুট!’

উল্লেখ্য, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের গিরিডি থেকে দু’জনকে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সুরজকুমার সিংহ বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। সোনু সিং নামে আরও একজনকে ধরা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে তার কোমরেই চোট লেগেছিল। আহত হওয়ায় বেশি দূর পালাতে পারেনি সোনু। কেননা, বিপদ রেখাটা আগেই টেনে রেখেছিলেন মেঘনাদ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *