প্রসঙ্গত, এই ঘটনা ২০১৭ সালের ব্লু হোয়েল গেমের সেই ভয়াবহ ঘটনা ফের মনে করিয়ে দিয়েছে। যা নিয়ে এ রাজ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, কলকাতায় একাধিক কিশোর-কিশোরীর খোঁজ মিলেছিল যারা এই খেলায় আসক্ত। কয়েকজনের অদ্ভুদভাবে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনাও সামনে আসে। শুরুটা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুর থানা এলাকায়। মৃত্যু হয়েছিল এক কিশোরের। এই খেলায় জড়িয়ে হঠাৎ করে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে পরিবর্তন দেখা দিত। যেমন, বন্ধুবান্ধব ছেড়ে মোবাইল নিয়ে একা থাকা, মাঝরাতে উঠে ভয়ের সিনেমা দেখার নেশা হওয়ার মতো কিছু অভ্যাস তৈরি হত। আবার খেলায় বেশ কিছুটা এগিয়ে গেলে হাত কেটে রক্ত দিয়ে তিমি মাছের ছবি আঁকার ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। আর তারপরেই বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা সামনে আসে। এই নিয়ে কিন্তু জেলায় জেলায় সচেতনতার শিবির শুরু করে পুলিশ। ব্লু হোয়েলের পর মোমো নামের একটি গেমও বেশ চিন্তায় ফেলেছিল পুলিশকে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার এরকম প্রাণঘাতী ‘গেম’ সেই সময়ের বেশ চিন্তার কারণ হয়েছিল। পরে যদিও এই প্রবণতা কমে। প্রায় ৭ বছর পর এরকম আরও একটি ঘটনা খানিক উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
এমনিতেই এই ধরনের গেম বেশ বিপজ্জনক। সাইবার কর্তারা বলছেন, এর থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে। আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে এরকম কিছু গেম। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা লোপাট হয়ে যেতে পারে, ‘হ্যাকিং’-এর ফলে ক্ষতি হতে পারে আরও অনেক বড়।
যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ওই কিশোর কয়েকদিন ধরেই কোনও অলৌকিক শক্তি যে তার ক্ষতি করতে পারে তা বাড়িতেও জানাচ্ছিল। এরকম ভাবনার পিছনে ওই গেমের হয়তো কোনও ভূমিকা ছিল। তাকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও ঠিক হয়েছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা। SDPO বারুইপুর অতীশ বিশ্বাসকে এ ব্যাপারে ফোন করা হলে এই সময় ডিজিটাল-কে তিনি বলেন, ‘তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এই ঘটনার পিছনে কোনও গেমের ভূমিকা আছে কি না তাও দেখা হবে।’ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।