Kolkata Durgapur National Highway,বেঁধে দেওয়া সময়েই শেষ হবে ছ’লেনের কাজ? বাধা ‘জমি জট’ – durgapur expressway construction work face crisis due to land acquisition


চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই দুর্গাপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার জাতীয় সড়কের পানাগড় থেকে পালসিটের ৬ লেন তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ ছিল। কিন্তু, তা কি আদৌ সম্ভব? ধাপে ধাপে নানা জায়গায় স্থানীয় মানুষজনের দাবি মিটিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, তারপরেও অনেক জায়গাতে জমিজট রয়েছে। এর ফলে সড়ক প্রকল্পের কাজ ধীর গতিতে চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই কাজ শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলায় চরম সমস্যার মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে আলোচনার মাধ্যমে অনেক দাবি মেটানো হয়েছে। বাকি সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে।বর্ধমান সদর (দক্ষিণ)-এর মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস জানিয়েছেন, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল তা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস। এখনও কাজ চলছে। যেখানে যেখানে সমস্যা ছিল জেলা প্রশাসনকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে জানালে সেখানে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। বাকি বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্প শুরুর সময় থেকে স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী কী কী কাজ করা দরকার তার জন্য তালিকা তৈরি করা হয়। পানাগড় থেকে পালসিট পর্যন্ত ৬৭.৫ কিলোমিটার রাস্তায় ৩২টির মতো উড়ালপুল, আন্ডারপাস তৈরির তালিকা তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে পরিদর্শন করে আরও ১৬টি আন্ডারপাস তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ‘জট’ পাকিয়েছে গলসির পুরষা, ভাসাপুল, মথুরাপুর, বর্ধমানের তেজগঞ্জ ও শক্তিগড়ের আমড়া এলাকাগুলি। এই জায়গাগুলিতে বড় আন্ডারপাসের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সব দাবি মানতে রাজি ছিল না জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পরেই পানাগড় থেকে পালশিট পর্যন্ত ১৩টি জায়গায় নতুন করে নির্মাণ কাজ সংক্রান্ত দাবি উঠেছিল। সমীক্ষার পরে ১০টি জায়গায় সড়ক কর্তৃপক্ষ কাজের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রশাসন ও সড়ক কর্তৃপক্ষ যৌথ পরিদর্শন করে স্থানীয়দের দাবি মেনে তেজগঞ্জ সহ অন্তত তিনটি জায়গাতে বড় আন্ডারপাস তৈরি করার আশ্বাস দেয়। তারপরেও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠকে ওই সব জায়গা সহ পাঁচটি গ্রামে স্থানীয়রা কাজ আটকে দিয়েছেন বলে সড়ক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানিয়েছে। গলসির পুরষাতে একাধিক আন্ডারপাস তৈরি হচ্ছে। পুরষা হাইস্কুলের সামনেও স্থানীয়রা আন্ডারপাসের দাবি করে।

গলসিরই ভাসাপুল গ্রামে গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ আটকে রয়েছে আন্ডারপাস নিয়ে দাবির জটে। সেখানে সুরক্ষাজনিত কারণে আন্ডারপাস করা সম্ভব নয় বলে সড়ক কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে।

যদিও সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসেই ১৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তার অনুমোদন এখনও মেলেনি। একই ছবি শক্তিগড়ের আমড়া সাঁকো ভাঙা মোড়েও। সেখানেও ফুট ওভারব্রিজের দাবিতে স্থানীয়রা অনড় থাকায় কাজ আটকে রয়েছে। এখানেও ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হলেও অনুমোদন মেলেনি। একইভাবে ভুক্তভোগীদের দাবি, দীর্ঘ দিন জাতীয় সড়কের কাজ চলায় তারা তীব্র যানজটের শিকার হচ্ছেন। কলকাতা বা দুর্গাপুর যাওয়া আসার রাস্তায় মাঝেমধ্যে গাড়ির লম্বা লাইন গতিকে স্তব্ধ করছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণও। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত কাজ শেষ করার আর্জি জানাচ্ছেন জাতীয় সড়কের দুই দিকে অবস্থিত বাসিন্দা থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা।

কাজ কবে শেষ হবে? এই বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও মন্তব্য মেলেনি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক প্রজেক্ট ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *