কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘হুলা দিয়ে হাতি তাড়ানো আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবুও বেকার ছেলেগুলোকে হুলাপার্টিতে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে নিয়োগ করেছে বন দপ্তর। এই ঘটনায় বনমন্ত্রী এবং ডিএফও নিজেদের দায় এড়াতে পারেন না। ওঁদের দায় নিতে হবে। কারণ হুলাপার্টিকে কারা সে দিন ঘটনাস্থলে নিয়ে এসেছিল? হুলাপার্টি তো নিজেরা আসেনি। বন দপ্তরের ব্যর্থতাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য সাধারণ নিরীহ ছেলেদের বলির পাঁঠা করছে।’
একই কথা শোনা গিয়েছে ‘জঙ্গলমহল স্বরাজ মোর্চার’ কেন্দ্রীয় সভাপতি অশোক মাহাতোর মুখে। তিনি বলেন, ‘হুলাপার্টির লোকদের তো বন দপ্তর নিয়ে এসেছিল। তারা তো নিজেরা সেখানে হাতি তাড়াতে আসেনি। বন দপ্তরের অফিসারদের উপস্থিতিতে যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে, তাই এই ঘটনার তদন্ত ‘ওয়ার্ল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো’র অধীনে হওয়া উচিত।’
ঝাড়গ্রামে হাতি-হত্যার ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘হুলাপার্টি’। কী এই হুলাপার্টি? লোকালয়ে হাতির দল ঢুকে পড়লে হাতি তাড়াতে ডাক পড়ে হুলাপার্টির। জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা সাহসী এবং দ্রুত গতিতে ছুটতে পারে এরকম যুবক ও মাঝবয়সীদের নিয়ে দল গঠন করা হয়। হাতি তাড়ানোর জন্য দু’বেলা খাবার এবং দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। হাতি এলাকায় ঢুকলেই এঁরা শুধুমাত্র ডাক পান।
তবে হুলাপার্টির নাম হয়েছে এক সময়ে তাঁদের ব্যবহৃত ‘হুলা’ নামক অস্ত্রটি থেকে। এই হুলা হলো ছুঁচলো এক ধরনের লোহার রড, যার মাথায় আগুন জ্বালানো যায়। তবে ২০১৮ সালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, হাতি তাড়াতে হুলা নিষিদ্ধ। শুধু হুলাই নয়, হাতিকে তাড়ানোর জন্য পাথর, বর্শা, ধারালো কোনও জিনিস বা আগুন নিক্ষেপ করা যায় না।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুলা নিষিদ্ধ হলেও দীর্ঘদিন ধরে হাতি তাড়ানোর দল বোঝাতে ‘হুলাপার্টি’ নামটি চলে আসছে। অশোক মাহাতো বলেন, ‘হুলাপার্টি নামটি বদলে এলিফ্যান্ট ড্রাইভ গ্রুপ বা এলিফ্যান্ট ট্র্যাকার্স বা এলিফ্যান্ট মনিটর টিম সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গঠন করা উচিত।’