মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হবে সন্দীপকে, ধর্ষণ-খুনের মামলাতেও যুক্ত হতে পারেন কি? – former rg kar principal sandip ghosh will be produced before the court on tuesday


গত ২৪ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হাসপাতালের বিভিন্ন বেনিয়ম নিয়ে তদন্তে নামে সিবিআই। ৯ দিনের মাথায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তারের পরে এদিন রাতেই তড়িঘড়ি তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কাল, মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।সোমবার যখন সন্দীপকে গ্রেপ্তার করা হয়, সে সময়ে লালবাজারের কিছুটা দূরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ ধর্নায় বসেছিলেন। সেখানেই সন্দীপকে গ্রেপ্তারের খবর শোনার পরে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চিকিৎসক খুন-ধর্ষণের মামলায় নয়, প্রাক্তন অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার হয়েছেন আর্থিক দুর্নীতির মামলায়।

ফলে, তাঁরা যেমন বিচারের দাবিতে রাস্তায় রয়েছেন, তেমনই থাকবেন। ৫ সেপ্টেম্বর, সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের মুখে নতুন স্লোগানও শোনা যায়, ‘সন্দীপ ঘোষের চামড়া, গুটিয়ে দিলাম আমরা’। তাঁদের দাবি, সন্দীপের গ্রেপ্তার সাফল্যের প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় ধাপ আসবে পুলিশ কমিশনার পদত্যাগ করলে।

প্রাথমিক তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করলেও ওই ঘটনার সঙ্গে সন্দীপের ‘যোগসাজশ’-এর অভিযোগ তুলতে শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা পুলিশ দাবি করে, ওই ঘটনার সঙ্গে একা সঞ্জয়-ই জড়িত। যদিও সে কথা মানতে চাননি নাগরিকদের একটা বড় অংশও। তরুণী খুন ও ধর্ষণের পরে অকুস্থল থেকে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের গুরুতর অভিযোগও ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।

সমাজের সর্বস্তর থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করে, ‘সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করতে হবে।’ কিন্তু, তা না করে আরজি করের অধ্যক্ষকে সেখান থেকে সরিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে পাঠানো হয়। এতে ক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ে। চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় অধ্যক্ষকে।

কিন্তু, এতেও প্রশমিত হয়নি ক্ষোভ। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, সাত দিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে না-পারলে তাঁরা সিবিআইয়ের হাতে এই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেবেন।

কিন্তু, সেই সুযোগ রাজ্যকে না-দিয়ে তার আগেই মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ঘটনার মাত্র চার দিনের মাথায়, ১৩ অগস্ট তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি সন্দীপকে ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি লিভ উইথআউট পে’-তে পাঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি। পরের দিন থেকেই তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে সিবিআই।

Sandip Ghosh Arrested: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার
ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় তদন্তে সিজিও কমপ্লেক্সে টানা ১৬ দিন ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এরই মধ্যে হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তা দেবল ঘোষ টালা থানায় সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৪ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে আরজি কর হাসপাতালের সেই দুর্নীতির তদন্ত করার নির্দেশ দেয়।

এরপর নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। সোমবার সন্ধ্যায় সন্দীপকে সিজিও থেকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০(প্রতারণা) এবং ১২০বি(অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় সন্দীপকে গ্রেপ্তার করা হয়। যেহেতু পুরোনো অভিযোগের ভিত্তিতে এই এফআইআর করা হয়েছে তাই এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী মামলা দায়ের করে সিবিআই।

কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রের খবর, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা না হলেও পরবর্তীতে তাঁকে সেই মামলাতেও যুক্ত করা হতে পারে। এমনকী, যে দুর্নীতির অভিযোগে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেই মামলায় টাকা পাচারের তদন্তেও ইডি সন্দীপকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে। ফলে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে আপাতত ‘প্রভাবশালী’ স্বাস্থ্যকর্তার রেহাই পাওয়া বেশ কঠিন কাজ বলেই মনে করছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *