ইলিশ নিয়ে বাঙালির রোমান্টিকতা চিরকালীন। এক সময় ওপার থেকে এপারে দেদার ঢুকত ইলিশ। তখন অবশ্য এই বাংলায় গঙ্গা-রূপনারায়ণেও মিলত সেরা মানের মাছ। তার পরে নানা কারণে কমতে শুরু করে ইলিশ। বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ করে উৎপাদন বাড়িয়ে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলা। এ দিকে, আকালের কারণে ভরা বর্ষাতেও ইলিশের জন্য হাহাকার শুরু হতেই বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা ইলিশে মুখে হাসি ফুটেছে এ পার বাংলার খাদ্য রসিকদের।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশ থেকে আসা মাছ অনেকদিন আগে থেকে হিমঘরে রাখা ছিল। ফলে তেমন তাজা মাছ বাজারে আসছে না। মাছ ব্যবসায়ী অতুলচন্দ্র দাসের সংস্থা বহু বছর ধরে ও পার বাংলা থেকে ইলিশ আমদানি করে। অতুল বলেন, ‘রোজ গড়ে ৭-৮ লরি করে ইলিশ ঢুকছে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে। হিমঘর থেকে এলেও, কোনও ভাবেই এ গুলো পুরোনো মাছ নয়। তাজা ইলিশই পাঠানো হচ্ছে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘আগামী ১০ তারিখ ও পার থেকে এ বছরের মতো শেষ বার ইলিশ ভর্তি লরি আসবে। ফলে পুজোর সময়ে ইলিশ মিললেও দীপাবলী-ভাইফোঁটার সময়ে বৈধ পথে আসা বাংলাদেশের ইলিশ আর মিলবে না।’
বর্তমানে যে ইলিশ আসছে, তার মাপ কেমন, দামই বা কত? বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি করছে ব্যবসায়ী জয়দেব হাতির সংস্থা। জয়দেব বলেন, ‘এ বছর যে ইলিশ আসছে, সেগুলির ওজন ৬০০ থেকে ১২০০ গ্রাম। মাপ অনুযায়ী পাইকারি বাজারে তা বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ গ্রামের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজি ওজনের মাছ ১৫০০-১৬৫০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে। তার থেকে বড় ইলিশের দাম ১৮০০ টাকা।’ কিন্তু খুচরো বাজারে সেই মাছের দাম কত?
মানিকতলা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুখদেব বিশ্বাস বলেন, ‘৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১২০০ টাকায়। এক কেজি ইলিশের দাম ১৬০০-১৭০০ টাকা। তার থেকে বড় ইলিশ ২০০০ টাকা বা তার বেশি।’ দক্ষিণ কলকাতার দিকেও দর সামান্য কমবেশি। অতুল জানান, বাংলাদেশেও পদ্মায় তেমন ইলিশের জোগান নেই। বেশির ভাগ মাছ মেঘনার মোহনা থেকে ধরা। অন্যদিকে, সুখদেবের দাবি, এ মাছগুলির স্বাদ জব্বর। কারণ, কেনার পরে খদ্দেররা এসে জানিয়ে গিয়েছেন, মাছের স্বাদ খুবই ভালো।’