তথাগত চক্রবর্তী: কলেজচত্বরে ছাত্রীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী! মাথা টেপানোর বিতর্কের পর TMCP নেতার আরেক নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে। মাথা টেপানোর বিতর্কিত ভিডিয়োর পর, প্রকাশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী! সোনারপুর কলেজ বিতর্কে নতুন মোড়, একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ করে সিপিএমের তোপ তৃণমূলকে।
সোনারপুর মহাবিদ্যালয়
ফের চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির তরফে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক বিতর্কিত ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনা হয়। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কলেজ চত্বরে এক ছাত্র এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যেই অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছে। সিপিএমের দাবি, এই ঘটনাটি ঘটেছে কলেজের ইউনিয়ন রুমের মধ্যেই। অভিযুক্ত যুবক একজন ছাত্র নেতা এবং ওই অপমানিত ছাত্রী ওই কলেজেরই, বলেও দাবি করা হয়েছে।
এছাড়াও, সিপিএম আরও কয়েকটি ভিডিয়ো সামনে আনে, যেখানে দেখা যাচ্ছে কলেজ ক্যাম্পাসেই কয়েকজন পড়ুয়া প্রকাশ্যে গাঁজা খাচ্ছে। এমনকী, কলেজের ইউনিয়ন রুমে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এলাকার কিছু নেতার বসে থাকার ছবিও দেখানো হয়েছে সাংবাদিকদের।
সিপিএমের অভিযোগ
কলেজটি এখন আর শিক্ষার মন্দির নেই, বরং তা রাজনৈতিক আশ্রয়ে বেহাল অবস্থায় পৌঁছেছে। প্রসঙ্গত, এই ঘটনার মাত্র দু’দিন আগেই কলেজের ইউনিয়ন রুমে এক ছাত্রীকে দিয়ে যুবনেতার মাথা টিপিয়ে নেওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যা নিয়ে প্রবল বিতর্ক শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে।
সিপিএমের দাবি, এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের পেছনে রয়েছেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা এলাকার বিধায়ক লাভলি মৈত্র। তাঁর মদতেই কলেজে লাগাতার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তাদের। শুধু সোনারপুর নয়, জেলার অন্য কলেজগুলিতেও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং তার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করছে তারা।
Sonarpur College Viral Video: কলেজচত্বরে ছাত্রীকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী! মাথা টেপানোর বিতর্কের পর TMCP নেতার আরেক নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে!
*ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি জি ২৪ ঘণ্টা*#SonarpurCollegeCase #ViralVideo #Zee24Ghanta pic.twitter.com/GK5JfQncBl
— zee24ghanta (@Zee24Ghanta) July 10, 2025
‘দাদার কীর্তি’
উল্লেখ্য, দিনদুয়েক আগেই প্রকাশ্যে এসেছে সোনারপুর কলেজে ‘দাদার কীর্তি’! কলেজের মধ্যেই ছাত্রীকে দিয়ে মাথা টেপাচ্ছেন ছাত্রনেতা! ভাইরাল সেই ভিডিয়ো। ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড় কলেজ চত্বর। কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ, আশুতোষ কলেজের পর এবার সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ে ‘দাদার কীর্তি’ ঘিরে বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এক ভিডিয়ো। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কলেজ চত্বরে নবাগত এক ছাত্রীকে দিয়ে মাথা টেপাচ্ছেন বছর ৪৪-র ছাত্রনেতা প্রতীক কুমার দে। বিষয়টি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
লাভলি মৈত্রের ‘আশীর্বাদে’ই প্রতীকের প্রভাব-ক্ষমতা!
ছাত্রনেতা প্রতীকের পরিচয়ও রীতিমতো চমকপ্রদ। তিনি সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদের কোঅর্ডিনেটর। তাঁকে এই পদে নিযুক্ত করেছেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র। পাশাপাশি, প্রতীক রাজপুর টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি পদেও রয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, বারুইপুর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র হয়েও কীভাবে প্রতীক সোনারপুর কলেজে এতখানি প্রভাব খাটান? বিরোধীদের দাবি, এই প্রভাব লাভলি মৈত্রের ‘আশীর্বাদে’!
প্রতীকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খোদ কাউন্সিলরের!
একসময় সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার সোনারপুর থানায় প্রতীকের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলাম। আজকের ঘটনা ফের প্রমাণ করল আমি ঠিক বলেছিলাম। এটি অত্যন্ত লজ্জার। দলীয় নেতৃত্বকে সব জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।”
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কলেজ কি ‘ছাত্র রাজনীতির আড়ালে’ ব্যক্তিগত ক্ষমতা প্রদর্শনের মঞ্চ হয়ে উঠছে? দলীয় নেতৃত্ব কবে মুখ খুলবে, সেদিকেই তাকিয়ে ছাত্রমহল।