সঞ্জয় রাজবংশী: তাঁর ইচ্ছে ছিল তারাপীঠের মন্দির (Tarapith Temple) যেতে পারলে যাবেন দণ্ডী কেটেই! মনে মনে বলেওছিলেন, যদি কখনও মা তারার (Ma Tara) কাছে যেতে পারি, তাহলে দণ্ডী কেটে যাব। অবশেষে তাঁর সেই ইচ্ছে এবার পূরণের পথে। রীতিমতো দণ্ডী কেটেই বীরভূমের তারাপীঠ (Tarapith, Birbhum) মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন মিঠুন মালিক।
পেশায় পরিযায়ী
পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক মিঠুন। মিঠুন মা তারার ভক্ত। দেখতে গেলে কিছুটা আর্থিক কারণেই তাঁর তারাপীঠ যাওয়া হচ্ছিল না বহুদিন ধরে। তখনই মনে মনে এই সংকল্প নিয়েছিলেন। সোমবার জিরাট থেকে তারাপীঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। একটি ব্যাগে তারা মায়ের ছবি আর প্রয়োজনীয় জিনিসরপত্র নিয়ে পথে বেরিয়ে পরেছেন। এই যাত্রায় মিঠুন পেয়েছেন কিছু মানুষের সাহায্য। কেউ কিনে দিয়েছেন ফুল-ফল! এতটা পথ দণ্ডী কাটতে সারা শরীরে ব্যথা হবে। তাই ব্যথা উপশমের স্প্রে কিনে দিয়েছেন কেউ! কেউ আবার কিনে দিয়েছেন ওষুধ, খাবার-দাবার।
তারা মা আছেন, তিনিই রক্ষা করবেন!
শুক্রবার মিঠুন এসে পৌঁছন কালনায়। দণ্ডী কেটেই এগিয়ে চলেছেন তিনি। জিরাট থেকে তারাপীঠ পর্যন্ত তাঁর সাথে ছায়ার মতো সঙ্গীর ছিলেন তাঁর স্ত্রী। এদিন মিঠুন মালিক জানান, ২০০ কিলোমিটার রাস্তা যেতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগার কথা। কিন্তু যাত্রাপথে অনেকেই বলছেন তাঁর সময় আরও বেশিই লাগবে। তবে, মিঠুনের বিশ্বাস– তারা মা আছেন, তিনিই রক্ষা করবেন। নিজের ইচ্ছের জোরেই মিঠুন এগিয়ে চলেছেন। ঝড়-বৃষ্টি যাই আসুক, তাঁকে মা-ই রক্ষা করবেন, তিনিই তাঁকে নিয়ে যাবেন তাঁর দুয়ারে– এমনই ভক্তি ও বিশ্বাসের জোর মিঠুনের।
‘দণ্ডী কাটা’ এবং স্বামীজি
‘দণ্ডী কাটা’ একটি ধর্মীয় আচার। সাধারণত হিন্দুধর্মেই দেখা যায়। এর অর্থ– ‘দণ্ডী’ বা একটি লাঠি বা দণ্ড ব্যবহার করে মাটিতে শুয়ে শুয়ে এগিয়ে যাওয়া। এটি দেবতাকে প্রণাম বা ভক্তি জানানোর এক ধরনের বিশেষ পদ্ধতি। সাধারণত, তীর্থযাত্রীরা মন্দির বা ধর্মীয় স্থানে পৌঁছনোর জন্য এই পদ্ধতিতে অবলম্বন করেন। তারকেশ্বর মন্দিরে দুধপুকুর থেকে মন্দির পর্যন্ত দণ্ডী কেটে যাওয়ার প্রথা রয়েছে। শোনা যায়, স্বামী বিবেকানন্দও দণ্ডী কেটেছিলেন। তিনি দণ্ডী কেটেছিলেন কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)