নারায়ণ সিংহ রায়: বৃহস্পতিবার ভোর রাতে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় থানা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে এটিএম ভেঙে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে গোটা প্রাশাসন মহলে। একের পর এক এটিএম, গয়নার দোকানে ডাকাতির ঘটনার কার্যত হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। তড়িঘড়ি তদন্তে নামে শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেটের একাধিক দল। হদিস পাওয়া যায় ডাকাত দলের।
ইস্টার্ন বাইপাসের এটিএম লুঠের ঘটনায় জড়িত পাঁচ জন। পুলিস সুত্রে খবর, পাঁচ জনই হরিয়ানার বাসিন্দা৷ ভিন রাজ্য থেকে এসে রেইকি করে এটিএম লুঠ করে রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে তারা। তাদের মধ্যে কেউ গিয়েছে আকাশ পথে আবার কেউবা অন্য মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে গা ঢাকা দেয়৷ যদিওবা ৫ দুষ্কৃতীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩ দুষ্কৃতীকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পেরেছে পুলিস।
চলতি মাসের ২১ তারিখ উজেইর খান, আদিল খান, সাজিদ কালা এই ৩ দুষ্কৃতী একটি কন্টেইনার করে গ্যাস কাটার সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে শিলিগুড়ি এসে পৌঁছায়৷ সাজিদ ও আফতাব নামে আরও দুই দুষ্কৃতি তাদের সঙ্গে পরে যোগ দেয়৷ শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়িতে একটি ধাবাতে আশ্রয় নেয় তারা৷ গোটা এলাকা রেইকি করে৷ এটিএম লুঠে একটি বাইক চুরি করে তারা। সেই বাইক করে আম্বিকানগরে এসে একটি টাটাসুমো চুরি করে। সেই টাটাসুমো করে এটিএম লুঠ করে আবার সেই টাটাসুমো মাটিগাড়ার হিমাচল বিহারে ফেলে দিয়ে হরিয়ানা থেকে তাদের নিয়ে আসা কন্টেইনারে করে এ রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন। এদের মধ্যে সাজিদ আর আদিল খান আবার বাগডোগরা থেকে আকাশ পথে অন্যত্র চলে যায়। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও টাওয়ার লোকেশান ট্রেক করে পুলিসের একটি দল দিল্লি যায়। দিল্লি পুলিশের সহযোগিতায় যৌথ অভিযান চালিয়ে সাজিদ , আদিল খানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। যদিওবা তারা পুরোনো কেসে দিল্লি পুলিসের হেফাজতে রয়েছে বর্তমানে। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে তাদের শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হবে৷ অন্যদিকে উজেইওর খানকে বিহারের সুফল জেলা থেকে কন্টেইনার সহ পালাবার সময় গ্রেফতার করে পুলিস৷ সব মিলিয়ে ৫ দুষ্কৃতীর মধ্যে ৩ জন পুলিশের জালে। সাজিদ কালা, আফতাব এখনও অধরা।
আরও পড়ুন- ‘কল্যাণীর স্নিগ্ধ মাটি, লাল-হলুদের শক্ত ঘাঁটি’, ডার্বিতে শিল্পাঞ্চলে জ্বলল মশাল…
আরও পড়ুন-স্থানীয় চিকিত্সকও বুঝতে পারেননি সাপে কামড়েছে, যখন বোঝা গেল তখন আর…
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (ইস্ট) রাকেশ সিং সাংবাদিক বৈঠকে জানান, “গোটা বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে৷ পুলিস তৎপরতার সঙ্গে এই ঘটনার সমাধান করেছে। প্রত্যেকেই এরা হরিয়ানার বাসিন্দা৷ গোটা ভারত জুড়ে এরা এটিএম লুঠ কান্ডের সাথে জড়িত। পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র যেমন রয়েছে তেমনি পশ্চিমবঙ্গের ডানকুনি, হুগলি সহ শিলিগুড়িতেও এটিএম লুঠের সাথে জড়িত। ঘটনার পর তারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এদের মধ্যে দুজন আকাশ পথেও পালিয়েছে৷ তবে ব্যাঙ্ককে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা লুঠ করেছিল৷ কিন্তু তার মধ্যে আমরা ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি৷”
ব্যাঙ্কের এটিএম গুলোর সুরক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পুলিস প্রশাসন। ব্যাঙ্কের সাথে লাগোয়া এটিএম গুলোতে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও বাকি কোন এটিএমে কোন নিরাপত্তা নেই। এরা ইন্সুরেন্সের টাকা পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু লুঠ হচ্ছে সাধারন মানুষের টাকা। এ নিয়ে পুলিসের তরফ থেকে ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক হলেও তার কোন সুফল মেলেনি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)