নান্টু হাজরা ও বিক্রম দাস: যুবভারতী কাণ্ডে বড় পদক্ষেপ পুলিসের। সল্টলেক স্টেডিয়ামের সম্পত্তি যারা ভাঙচুর করে নিয়ে গেছে এবার তাদেরকে আইডেন্টিফাই করার প্রসেস শুরু করল বিধান নগর পুলিস কমিশনারেট। সল্টলেক স্টেডিয়ামে ১৩ তারিখে মেসিকে দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত জনতা স্টেডিয়ামে ভাঙচুর চালায়। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই জেল হেফাজত দিয়েছে বিচারক।
পুলিস সূত্রে খবর, এবার পুলিসের নজরে সেই সমস্ত ব্যক্তিরা যারা স্টেডিয়ামে ভাঙচুরের পর স্টেডিয়ামের বিভিন্ন সম্পত্তি নিয়ে স্টেডিয়ামের বাইরে বেরিয়েছেন। বিভিন্ন ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে বিধান নগর পুলিস কমিশনারেট। ১৩ তারিখের ফুটেজে দেখা গিয়েছে কেউ বাইকে করে, কেউ হাতে করে চেয়ার, কেউ আবার ফুলের টব অথবা অন্যান্য জিনিস নিয়ে স্টেডিয়াম ছেড়েছে। এবার সেইসব ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করল বিধান নগর পুলিস কমিশনারেট।
অন্যদিকে, ১৩ তারিখের ঘটনার সময় সল্টলেক স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট একটি ব্লক থেকে প্রথম বোতল ছোড়া শুরু হয় মাঠের দিকে। কোন ডিরেকশনে বোতল ছোড়া হয়েছিল তা জানতে ফরেনসিকের সাহায্য নিল SIT। জানা গিয়েছে, ভিসিবিলিটি গার্ড হওয়ার কারণে বা দেখতে না পাওয়ার কারণে প্রথম বোতল ছোড়া শুরু হয় লোয়ার টিয়ারের দিক থেকে। ইতিমধ্যেই সেই ব্লককে চিহ্নিত করেছে SIT। এর পাশাপাশি, সল্টলেক স্টেডিয়ামের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করল SIT।
বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ব্রডকাস্ট হওয়া আউটপুট লিংকও। মাঠের মধ্যে কতজনকে গ্রাউন্ড অ্যাকসেস কার্ড দেওয়া হয়েছিল ও কারা দিয়েছিল তাও খতিয়ে দেখছে SIT। প্রসঙ্গত, সল্টলেকে মেসিকাণ্ডে রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমারকেই শোকজ করেছে সরকার। পাশাপাশি শোকজ করা হয়েছে বিধাননগরের সিপি, রাজ্যের স্পোর্টস সেক্রেটারিকেও। ঘটনার দিনই চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও বিশৃঙ্খলার তদন্তে মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে রেখে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, পীয়ূস পাণ্ডে, জাভেদ শামিম, সুপ্রতীম সরকার ও মূরলীধর শর্মা- ৪ আইপিএসকে নিয়ে গঠন করা হয় সিটও।
এখন রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমারের কাছে শোকজে জানতে চাওয়া হয়, কেন সেই দিন স্টেডিয়ামে এহেন অব্যবস্থা হয়েছিল? কেন ইভেন্টের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মধ্যে যথাযথ কো-অর্ডিনেশন ছিল না? সিপি বিধাননগর মুকেশ কুমারকে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (VYBK) ইভেন্টের ব্যবস্থাপনায় তাঁর ভূমিকা ও কার্যকলাপ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ওদিকে, ইভেন্টের দিন কর্তব্যে অবহেলার জন্য অনীশ সরকার (আইপিএস), ডিসিপি, হেড কোয়ার্টার্স-এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে এবং তাঁকে এনকোয়ারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ওদিকে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসির ইভেন্টে চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও ত্রুটিগুলির বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ করা হয়েছে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রাজেশ কুমার সিনহাকেও। সব মিলিয়ে যুবভারতী কাণ্ডে প্রথম থেকেই একেবারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে সরকার। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সিইও দেব কুমার নন্দনের বিরুদ্ধেও পরিষেবায় অব্যবস্থা ও ইভেন্টের যথাযথ পরিচালনায় ত্রুটির কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
