Samaraditya Pal : প্রয়াত সমরাদিত্য ‘বাচ্চু’ পাল – veteran lawyer constitutional expert samraditya pal passed away


এই সময়: বয়সজনিত কারণে দীর্ঘ দিনই আর তাঁকে তাঁর প্রিয় কর্মক্ষেত্র কলকাতা হাইকোর্টে দেখা যেত না। নানা অসুস্থতায় কাবু হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর শরীরস্বাস্থ্য নিয়ে গুণগ্রাহীদের মধ্যে আশঙ্কা বাড়ছিল। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ভোরে রাজ্য তথা দেশের আইনি মহলকে আরও একটু নিঃস্ব করে না-ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ সমরাদিত্য পাল।

Anubrata Mondal : হাইকোর্টে জোর ধাক্কা অনুব্রতর, দিল্লি যেতেই হচ্ছে কেষ্টকে
যিনি আইনি মহলে সমধিক পরিচিত বাচ্চু পাল নামেই। বয়স ৮৪ পেরিয়েছিল। এ দিন ভোরবেলায় আলিপুরে নিজের বাসভবনেই মারা যান সমরাদিত্য। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি থেকে শুরু করে আইনি পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ হাজির হন বাড়িতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মলয় ঘটক প্রয়াত আইনজীবীর বাড়ি গিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন।

Anubrata Mondal: পথে নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের অবস্থানে চিন্তা, ফের দিল্লি যাওয়া নিয়ে সংশয় অনুব্রতর?
১৯৩৮-এর ১৫ ডিসেম্বর জন্ম। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াশোনা। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েই আইনের পাঠ। ব্যারিস্টার হন ইনার টেম্পল লন্ডন থেকে। কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আইনি পেশায় প্রবেশ পাঁচ দশকেরও বেশি আগে, ১৯৬৭ সালে। সাংবিধানিক নানা বিষয়ে মামলায় তিনি ছিলেন দিক্‌পাল। জটিল মামলায় তিনি যে পক্ষের হয়েই সওয়াল করুন না কেন, তাঁর বক্তব্য শোনা ছিল সবার কাছেই শিক্ষণীয়। বহু জটিল আইনি বিষয়কে সহজ করে আদালতে পেশ করতেন।

Group C recruitment Scam : কোন ‘জাদুতে’ ৪০ নম্বর হয়ে গেল ১০? গ্রুপ সি-দের OMR শিট প্রকাশের নির্দেশ হাইকোর্টের
তাঁর লেখা বিশেষত দু’টি বই আইনি পেশায় যুক্তদের কাছে আজও মহা মূল্যবান–কয়েক খণ্ডের ‘ইন্ডিয়া’স কনস্টিটিউশন: অরিজিনস অ্যান্ড ইভোলিউশন’ এবং ‘দ্য ল অব কনটেম্পট’। সাম্প্রতিক অতীতে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে টাটাদের হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সমরাদিত্য পালের সওয়াল এই আইনি লড়াইকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল।

Calcutta High Court On Anubrata Case : ‘প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে AIIMS-এ নিয়ে যাওয়া হবে অনুব্রতকে’, হাইকোর্টে জানাল ED
২০১৩-য় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সন মীরা পাণ্ডের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন-সহ একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে আইনি লড়াইয়েও তিনি আদালতে মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের থেকে কোনও পারিশ্রমিকও নেননি। আবার বিস্ক ফার্ম কোম্পানির মালিক কেডি পালের হয়ে তাঁর আইনি লড়াইও মনে রাখার মতো।

Anubrata Mondal News: কেষ্টকে কলকাতায় আনতে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে টানাপোড়েন, আদালতে যেতে পারে জেল কর্তৃপক্ষ
নিঃসন্তান বাচ্চু পালের স্ত্রী রুমা পাল বিচারপতি হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর নিয়েছেন কয়েক বছর আগে। এই বর্ষীযান আইনজীবীর মৃত্যুসংবাদ জেনে সকালেই হাইকোর্টে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর বাড়িতে হাজির হতে থাকেন আইনি পেশার দিক্‌পালরা। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের দু’জনের দীর্ঘ পথ চলার স্মৃতিচারণ করছিলেন।

Justice Abhijit Ganguly : পুরুলিয়া সফরে খোশমেজাজে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, আদালত চত্বরে সেলফি তোলার হিড়িক
তাঁর কথায়, ‘এই মৃত্যু বিচারবিভাগের জন্যে বিপুল ক্ষতি।’ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তথা দেশের বর্তমান লোকপাল পিনাকীচন্দ্র ঘোষের বক্তব্য, ‘পরিবারেরই এক জনকে হারালাম।’ সদ্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে অবসর নিয়েছেন ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আজ আমি যেটুকু পথ এসেছি, সবটাই ওঁর পরামর্শ এবং গাইডেন্সে। ওঁর জুনিয়র হিসেবেই এক সময় এই পেশায় কাজ শুরু করেছিলাম।

Satyabrata Mookherjee : প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়, শোকপ্রকাশ মমতা-শুভেন্দুর
তার পরে যেখানেই গেছি, ওঁর পরামর্শ আমাকে ঠিক পথে চালিত করেছে। আমার কাছে এ এক মস্ত ক্ষতি।’ সদ্যই প্রয়াত হয়েছেন আর এক দিক্‌পাল আইনজীবী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছেলে রাজ্যের বর্তমান অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি পর পর দু’জন অভিভাবককে হারালাম। এক সময়ে আমার মা উর্মিবালা মুখোপাধ্যায়ের জুনিয়র ছিলেন পরবর্তীতে বিচারপতি রুমা পাল। তাই দুই পরিবারের মধ্যে একটা গভীর যোগাযোগ ছিল। এখন আর এই সব নিয়ে কিছু বলার মতো মানসিক অবস্থাও নেই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *