সব্যসাচী বাগচী 

স্পেন: ১ (‘৬২ আলভারো মোরাতা) 

জার্মানি: ১ (‘৮৩  নিকলাস ফুলক্রুগ) 

৯০ মিনিটের এমন যুদ্ধ দেখার জন্য অনেক রাত জাগা যায়। খোঁচা খাওয়া বাঘ জার্মানির বারবার প্রত্যাবর্তন করার মরিয়া চেষ্টা। অন্যদিকে স্পেনের লড়াই ও তিকিতাকা। এবং সবাইকে ছাপিয়ে দুই ‘সুপার সাব’-এর দারুণ গোল। স্পেনের আলভারো মোরাতা কিংবা জার্মানির নিকলাস ফুলক্রুগ দেখিয়ে দিলেন, হারার আগে হেরে যাওয়া তাঁদের অভিধানে নেই। ৬৩৭টি পাস খেলা স্পেনের তিকিতাকা-র বিরুদ্ধে লড়াই, ড্র করে কাপ যুদ্ধে টিকে থাকল জার্মানি। কারণ খেলার ফলাফল ১-১। 

পুরনো পরিসংখ্যান লেখার হরফেই ভালো লাগে। আদতে একেবারে শুকনো। এই যেমন ধরুন ৯০ মিনিটের যুদ্ধে স্পেন বনাম জার্মানির ইতিহাস। বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অন্য প্রতিযোগিতা, সর্বত্র জার্মানির পাওয়ার ফুটবল দাপট দেখিয়েছে স্প্যানিশদের উপর। তবে আল বায়াত স্টেডিয়ামে এক অন্য স্পেনকে দেখা গেল। কোস্টারিকাকে সাত গোল দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল স্পেন। এবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাকফুটে থাকা জার্মানদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার সঙ্গে ভাগ্য দেবতাও দিল ‘তিকিতাকা’-র আবিষ্কারকদের সঙ্গে। কিন্তু সেই ভাগ্য পুরো ম্যাচে স্থায়ী হল না। কারণ জার্মানরাও লড়াই ছাড়েনি। 

লক্ষ্য তিন পয়েন্ট। সেইজন্য কাই হাভার্ৎজকে বসিয়ে স্ট্রাইকার হিসাবে টমাস মুলারকে খেলিয়েছিলেন জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। স্পেনও থেমে থাকেনি। গত ম্যাচের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শুরু থেকেই পাসের ফুলঝুরি দেখাতে লেগেছিল। তবে প্রথমার্ধের মাঝের দিকে দুই দলই স্লথ গতির ফুটবল খেলতে শুরু করে। দেখা যায় একাধিক মিস পাস! 

এরইমধ্যে ২৫ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। স্পেনের ভুল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে শট মেরেছিলেন নাব্রি। গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে গেল। ন্যুয়েরের ভুল ক্লিয়ারেন্স থেকে সুযোগ পেয়েছিল স্পেনও। কিন্তু কাজে লাগাতে পারল না। ৩২ মিনিটে আবার সুযোগ পায় স্পেন। এবার ফেরান তোরেস। তবে বল জালেও রাখতে পারেননি। পারলেও অফসাইড হতেন। 

খেলার বয়স তখন ৪০ মিনিট। বেশি পাস ও বল পজেশনের দিক থেকে স্পেন এগিয়ে থাকলেও, জার্মানির কাছে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ চলে এসেছিল। জোশুয়া কিমিচের ফ্রিকিক থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেছিলেন অ্যান্টনিও রুডিগার। স্বভাবতই উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করছিলেন। কিন্তু ‘ভার’-এর সাহায্য নিয়ে রেফারি জানিয়ে দিলেন, তিনি অফসাইড। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হল জার্মানির।

প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধেও সেই এক ছবি। বল দখলের লড়াই হচ্ছে। কিন্তু গোলের মুখ কোনও দলই খুলতে পারছে না। ঠিক এমন সময় ৫৪ মিনিটে একটা চাল দিলেন স্পেনের ‘বস’ লুইস এনরিকে। আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ানোর জন্য ফেরান তোরেসের পরিবর্তে আলভারো মোরাতাকে নামালেন। আর তাঁর সেই সিদ্ধান্ত বদলে দিল ম্যাচের চেহারা। ৬২ মিনিটে ‘সুপার সাব’ আলভারো মোরাতার ডান পায়ের টোকা থেকে এগিয়ে গেল স্পেন। বাঁ দিকে বল পেয়েছিলেন জর্দি আলবা। জার্মানির রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোল করলেন বক্স স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। 

কিন্তু এটা কোন জার্মানি! মরিয়া হয়ে একের পর এক আক্রমণ করলেও, সেই সুযোগ হেলায় নষ্ট করছিল জার্মানরা। স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমোনকে একা পেয়েও অকারণে জোরে শট মারতে গিয়ে তাঁর গায়ে মারলেন জামাল মুসিয়ালা। সুবর্ণ সুযোগ হারাল জার্মানি। তবে হাল ছাড়েননি জার্মানদের হেড স্যর হ্যান্সি ফ্লিক। গোল হজম করতেই ৭০ মিনিটে বহু যুদ্ধের নায়ক থমাস মুলারকে তুলে মাঠে নামিয়ে দেন নিকলাস ফুলক্রুগকে। এবারও আর এক ‘সুপার সাব’ নিকলাস ফুলক্রুগ ৮৩ মিনিটে গোল করে সমতা ফেরালেন। একার কৃতিত্বে স্পেনের ডিফেন্সকে ঘোল খাইয়ে বক্সের ভিতরে ঢুকে পড়লেন মুসিয়ালা। তাঁর থেকে বল পেয়ে গোল করলেন নিকলাস ফুলক্রুগ।

 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version