লকডাউন, চারিদিকে হাহাকার। মহামারীর চোখ রাঙানিতে চাকরি গিয়েছিল অজয়নগরের তরুণীর মৌমিতা মিস্ত্রির। প্রথমে তিনি ঠাহর করে উঠতে পারেননি কীভাবে এই ধাক্কা সামলাবেন। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন মৌমিতা। পকেটে অর্থের অভাব ছিল, কিন্তু মনে ছিল অসম্ভব জোর। ঠ্যালা গাড়িতে মোমো ব্যবসা শুরু করে আজ ‘মোমো চিত্তে’-র পাঁচটি আউটলেটের মালিক তিনি। জোর গলায় এই তরুণী জানালেন, কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরের থেকে মাস গেলে বেশি আয় করেন তিনি।

Darjeeling Himalayan Toy Train : টয় ট্রেনের কামরাতেই চা-মোমো-কফি! একাধিক বড় স্টেশনে ‘কোচ রেস্তরাঁ’ চালুর উদ্যোগ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের
লকডাউনে যাত্রা শুরু…
শহর কলকাতায় এই মুহূর্তে পাঁচটি আউটলেট রয়েছে ‘মোমো চিত্তে’-র। আর এই মোমো ব্র্যান্ড তৈরির নেপথ্য কারিগর মৌমিতা জানান, “BSC পাশ করার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতাম। লকডাউন যখন শুরু হয়েছিল তখনই বুঝেছিলাম চাকরিটা চলে যাবে। গিয়েওছিল। কিন্তু, বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগত না। তাই কিছু একটা শুরু করতে চেয়েছিলাম। রান্না করতে ভালোবাসতাম। তাই এই কাজটা শুরু করি। আমার কাছে খুব একটা বেশি অর্থ ছিল না। তাই সামান্য অর্থ দিয়ে একটা ঠ্যালাগাড়ি তৈরি করেছিলাম। তার উপরেই মোমো বিক্রি করা শুরু করি।” মৌমিতা জানান, তখনও তিনি বুঝতে পারেননি এই উদ্যোগ রাতারাতি এভাবে জনপ্রিয়তা পাবে। বর্তমানে বর্তমানে তাঁর পাঁচটি আউটলেটে ১৫ জন মেয়ে এবং নয় জন ছেলে কাজ করেন।

East West Metro : শিয়ালদা থেকে সল্টলেক যাত্রা আরও সহজ, ইস্ট-ওয়েস্ট রুটে বাড়ছে মেট্রো
মৌমিতা বলেন, “আগামী ১৭ ডিসেম্বর হালতু এবং পরে যাদবপুরে আমাদের একটি আউটলেট খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। মোমো চিত্তের ক্ষেত্রে আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি তা হল প্রথম সারির যোদ্ধারা প্রত্যেকেই মেয়ে। আমার মতো আরও মহিলারা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন সেই জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” বাড়ির সকলে সরকারি চাকুরে, মেয়ে কিনা ঠ্যালায় মোমো বিক্রি করবে! প্রথমে প্রতিবাদী হয়েছিল পরিবার। কিন্তু, ‘অবাধ্য মেয়ে’-টা করে দেখিয়েছে। প্রথম দিন এক প্লেট মোমো বিক্রি করতে চেয়েছিলেন মৌমিতা। তার জায়গায় বিক্রি হয়েছিল ছয় প্লেট। এরপরেই উৎসাহ পান এই তরুণী। সোশাল মিডিয়ার সৌজন্যে তাঁর দোকান বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। মৌমিতা জানান, সেই সময় আমার প্রিয় বন্ধু সঙ্গে ছিল। এখন ও আমার স্বামী।

Duare Ration : দুয়ারে রেশন প্রকল্পে কোনও বাধা নেই, সুপ্রিম কোর্টে বড় স্বস্তি রাজ্যের
নিজের রোজগার প্রসঙ্গে মৌমিতা বলেন, “যে কোনও কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরের থেকে আমি বেশি রোজগার করি এটুকু বলতে পারি। পরিবার এবং কাছের মানুষজনের খেয়ালও রাখতে পারি। প্রতিদিন বহু মহিলারা কাজের জন্য ফোন করেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version