জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বেশ কয়েক বছর ধরে ধরেই বাংলাদেশে রফতানির ব্যবসা করছেন। এমন দুষ্কৃতীদের খপ্পরে কখনও পড়েননি উত্তর ২৪ পরগনার পলতা-র ব্যবসায়ী নীলেশ বিশ্বাস। গত মাসের ২৯ তারিখে যশোরে গিয়ে ভয়ানক বিপদে পড়ে যান নীলেশবাবু। তাকে ঘিরে ধরে কিছু লোক। তারপর তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখা হয় এক প্রত্যন্ত গ্রামে। নীলেশ বিশ্বাসের স্ত্রী মৌমিতা বায়েন জানিয়েছেন, কয়েকদিন এভাবে লুকিয়ে রাখার পর আমাকে ফোন করে বলা হয়, নীলেশের ওখানে ব্যবসা করা যাবে না। ওকে এখান থেকে যেতে দেওয়া হবে না। আশ্চর্যের বিষয় হল কোনও মুক্তিপণ তারা তখনও চায়নি। অথচ ছেড়েও দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন-কমলা বিকিনি-ই প্রিয়! সূর্যের মতই আগুন ঝরাচ্ছেন যে বলি নায়িকারা
স্বামী বাংলাদেশে অপহৃত হওয়ায় প্রবল বিপাকে পড়ে যান মৌমিতা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ছোটেন টিটাগড় থানায়। সেখানেও ওপার থেকে আসা ফোন নম্বর দেখিয়ে অভিযোগ করে কোনও কাজ হয়নি। অভিযোগ নিয়ে তিনি যান পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ হাইকমিশনেও। সেখানেও কোনও সুরাহা হয়নি। শেষপর্যন্ত যোগাযোগ করেন আইনজীবী ঋষিরাজ মহন্তর সঙ্গে। তাঁর পরামর্শেই মৌমিতা যান বিদেশ মন্ত্রকে। গোটা বিষয়টি সেখানে জানাতেই বাংলাদেশ পুলিস গিয়ে উদ্ধার করে নীলেশবাবুকে।
ফল-সবজি-সহ বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য বাংলাদেশে রফতানি করেন নীলেশ বিশ্বাস। গোটা বাংলাদেশ জুড়েই এই ব্যবসা তিনি করে আসছেন গত ৮ বছর। আচমকা এই ঘটনায় চমকে গিয়েছে গোটা পরিবার। নীলেশ বিশ্বাসের স্ত্রী মৌমিতা জানিয়েছেন, যশোর নীলেশকে অপহরণ করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তার পাসপোর্ট। এলাকার মানুষজন তাঁকে উদ্ধার করে একটি হোটেলে রাখলেও তার উপরে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখতে থাকে অপহরণকারীদের লোকজন। এরপর শুরু হয় খুনের হুমকি, টাকার দাবি ও বাড়িতে ফোন।
এদিকে, ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের চাপে বাংলাদেশ পুলিস উদ্ধার করে নীলেশকে। কিন্তু চমকের আরও বাকী। ঘরে ফেরার দিন বেনেপোল সীমান্ত থেকে নীলেশকে আনতে যান মৌমিতা ও তার পরিচিত দাদা হাসনুজ্জমান। মৌমিতার দাবি, নীলেশ ভারতে ঢুকেই আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায় দুই বাংলাদেশি। তারা বেশ ঠান্ডা গলায় টাকার জন্য হুমকি দেয়। এমনকি এও জানিয়ে দেয়, এপার বাংলাতেও তাদের নেটওয়ার্কে রয়েছে। টাকা না দিলে তাদের দেখে নেওয়া হবে। বর্তমন পরিস্থিতি হল, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ লাখ টাকা না দিলে খুন করে ফেলা হবে নীলেশকে। এমনটাই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কারা তাকে হুমকি দিচ্ছিলেন তাদের সবার ফোন নম্বর বিদেশ মন্ত্রককে জানিয়ে মেইল করেছেন মৌমিতা। তাতে নীলেশ ঘরে ফিরলেও এপারে এসেও সমানে হুমকি চলছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন মৌমিতা।