বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, ‘বিষয়টি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। কারণ অন্য বন্যপ্রাণীদের মতো শুধুমাত্র ক্যামেরা ট্র্যাপের সাহায্যে ছবি দেখে ভালুকদের সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই সম্পূর্ণ বিজ্ঞান ভিত্তিক পদ্ধতি মেনে ডিএনএ পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনও রকম ভুলভ্রান্তি অথবা ত্রুটি না থাকে।’
গত বছর তো বটেই, চলতি বছরেও নভেম্বর মাসে সামান্য শীত পড়তেই তরাই ও ডুয়ার্সে বিশেষত, আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় ও চা-বাগানগুলিতে এশিয়াটিক ব্ল্যাক বেয়ারের আনাগোনা বেড়ে যায়। গত একমাসে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসা কমপক্ষে ১৫টি ভালুক উদ্ধার করেছে বন দপ্তর। যার মধ্যে দু’টিকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে ঠাঁই দেওয়া হলেও বাকিগুলোকে ফের প্রকৃতির কোলে ফেরানো হয়েছে। তরাই ও ডুয়ার্স জুড়ে এত দিন ধরে হাতি-মানুষ অথবা লেপার্ড-মানুষের সংঘাতের ঘটনা ঘটলেও, ভালুকের উপদ্রবের তেমন নজির ছিল না। কিন্তু পরপর দুই বছর শীত নামতেই ভালুকদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ ছড়ায় বন দপ্তরের অন্দরে। কারণ চলতি বছরে আগন্তুক ভালুকগুলির সঙ্গে মানুষের সরাসরি সংঘাতের ঘটনা না ঘটলেও, গত বছর ভালুকের আক্রমণে প্রাণ গিয়েছিল এক কিশোরের।
উল্টে মানুষের রোষের শিকার হয়েছিল দু’টি ভালুক। স্বাভাবিক ভাবেই বনকর্তারা মনে করছেন যে, উত্তরবঙ্গের জঙ্গলগুলিতে ঠিক কত সংখ্যক ভালুক রয়েছে, তার পরিসংখ্যান সামনে এলে ভালুকের মোকাবিলা করার ছক সাজানো অনেক সহজ হবে। যার ফলেই ভালুক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে জটিল ও সময় সাপেক্ষ হলেও ওই ‘লিওর ট্র্যাপিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভালুকের সংখ্যা নিরুপণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দপ্তর। এর পর প্রয়োজন হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ভালুক অধ্যুষিত এলাকাগুলিতেও ভালুক-মানুষের সংঘাত ঠেকাতে ‘লিওর ট্র্যাপিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।