শ্যামগোপাল রায়
ওমিক্রনের নয়া বিএফ.৭ উপপ্রজাতি এখন শুধু চিনেই আর সীমাবদ্ধ নেই। ঢুকে পড়েছে এ দেশেও। সে খবর প্রকাশ্যে আসতেই ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে আমজনতার বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রবণতা। স্বাস্থ্যভবনের পরিসংখ্যান বলছে, ২০ ডিসেম্বর যেখানে রাজ্যে বুস্টার নিয়েছেন ২৯৫ জন, সেখানে শনিবার বুস্টারের আওতায় এসেছেন ২৯৯৯ জন। অর্থাৎ পাঁচ দিনেই সংখ্যাটা বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ।

Corona Booster Dose : প্রয়োজন বুস্টার ডোজ়, অথচ বঙ্গে বাড়ন্ত করোনা ভ্যাকসিন
তবে রাজ্যের হাতে এই মুর্হূতে কোভিশিল্ড নেই বললেই চলে। রয়েছে সামান্য কোভ্যাক্সিন। যার জেরে বিপাকে টিকা কেন্দ্র গিয়ে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে। বিপাকে কাউন্সিলরা। কারণ, তাঁদের কাছেও যাঁরা টিকার জন্য আসছেন তাঁদেরও ‘না’ বলতে হচ্ছে। আমজনতার টিকাকরণে আগ্রহ বাড়তেই বেসরকারি ক্ষেত্রেও নতুন করে টিকাকরণ শুরুর চল দেখা যাচ্ছে। তবে তাদের কাছেও টিকা বাড়ন্ত।

সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। সোমবার এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে কোভিশিল্ড আমাদের হাতে প্রায় একেবারেই নেই। কোভ্যাক্সিন যা রয়েছে সেটাও সংখ্যায় খুব কম। ফের নতুন করে করোনার আতঙ্ক মাথাচাড়া দেওয়ায় মানুষের মধ্যে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সে কারণেই টিকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনটন প্রকট হয়ে পড়েছে।” তিনি জানান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে অবিলম্বে টিকা পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। আশা, খুব তাড়াতাড়িই টিকা হাতে আসবে।

Coronavirus Latest News : করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দুনিয়া, নয়া ভ্যারিয়্যান্ট রুখতে কতটা তৈরি ভারত?
সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কো-উইনের তথ্য বলছে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনার দু’টি ডোজ় পেয়েছেন ৬ কোটি ৬৬ লক্ষ ৯১ হাজার ১১৩ জন। আর বুস্টার ডোজ় নেওয়া মানুষের সংখ্যা মাত্র ১ কোটি ৫৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৪। বর্তমানে রাজ্যের ২৮টি স্বাস্থ্যজেলা মিলিয়ে কোভ্যাক্সিন মজুত রয়েছে মাত্র ৯৬ হাজার ডোজ়। কোভিশিল্ড রয়েছে মাত্র ১২ হাজার ডোজ়। তবে বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোরের ভাঁড়ারে কোভিশিল্ড এই মুর্হূতে মজুত নেই বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর।

স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, মাঝে করোনার সংক্রমণ কমার কারণেই বুস্টার নেওয়ার আগ্রহ তলানিতে এসে ঠেকেছিল। তার জেরেই এখনও পর্যন্ত মাত্র দেড় কোটি মানুষ বুস্টারের আওতায় এসেছেন রাজ্যে। এই প্রবণতার কারণেই প্রশাসনের তরফে কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল টিকাকেন্দ্রের সংখ্যা। এবার ভয় ফিরতেই ছবিটা পাল্টাচ্ছে। বাগুইআটির বাসিন্দা সুমন চৌধুরী কিংবা মানিকতলার শ্রাবণী সেনগুপ্ত তিন দিন ধরে বুস্টার নেওয়ার চেষ্টা করেও তাই পাননি। সব জায়গা থেকেই শুনতে হয়েছে, কোভিশিল্ড নেই।

Covid in India Update : দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঘা এখনও দগদগে, করোনার সিঁদুরে মেঘ দেখে বড় ঘোষণা দিল্লির সরকারের
কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত বলছেন, “যখন টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা বসেছিলেন, তখন কেউ আসেননি। এখন অনেকেই টিকার জন্য আসছেন। টিকা না থাকায় তাঁদের পরে আসার অনুরোধ করছি।” পুরকর্তারাও বলছেন, মাঝে বুস্টার নেওয়ার জন্য লাগাতার প্রচার করা হলেও তা কেউ শোনেনি। তখন কথা শুনলে এই সমস্যা হতো না বলেই মনে করছেন দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট।

তারিখ সহ মোট ডোজ় বুস্টার

২০ ডিসেম্বর ৫৬৪ ২৯৫, ২১ ডিসেম্বর ১২৬৫ ৯৭৫, ২২ ডিসেম্বর ১৮১০ ১২৭৪, ২৩ ডিসেম্বর ৩০৯৭ ২৪৯০, ২৪ ডিসেম্বর ৩৩৭০ ২৯৯৯



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version