সাংসদ শতাব্দী রায় (Shatabdi Roy) আসবেন জেনে আপ্যায়নে কোনও ক্রুটি রাখেনি দলীয় কর্মী। মেনুতে ছিল ভাত, তরকারি, মাছ, মাংস। কিন্তু জানা গিয়েছে শতাব্দী রায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি মতোই যান দলীয় কর্মীর বাড়ি। কিন্তু অভিযোগ, এসে সাজানো পাতের সামনে বসে ছবি তুলে কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে চলে যান শতাব্দী। হাতটুকুও লাগালেন না খাবারে।এই ঘটনা সামনে আসতেই তীব্র কটাক্ষ বিরোধীদের। এ ব্য়াপারে সাংসদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। ওই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি। কিন্তু, এই ঘটনা নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতেই ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে তৃণমূলের। গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের কথা শুনবেন দলের নেতা-নেত্রীরা। শীর্ষ নেতৃত্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ময়দানে নেমেও পড়েছেন তাঁরা। সেই কর্মসূচিতেই এদিন বীরভূমে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এদিন দিদির সুরক্ষা কবচ (Didir Suraksha Kavach) কর্মসূচিতে বেরিয়ে দলীয় কর্মীর বাড়ি মধ্যাহ্নভোজ সারবেন এটাই ঠিক ছিল। সকাল থেকে অভাব-অভিযোগ শোনার পর বীরভূমের বিষ্ণুপুরের তেঁতুলিয়ায় তৃণমুল কর্মী সুজিত সরকারের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুধু শতাব্দী নন, দলের জেলাস্তরের নেতা-নেত্রীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ভাত, মাছ, মাংসের পদে সাজানো থালা। তার সামনে নির্দিষ্ট আসনেও বসেন শতাব্দী। উপস্থিত ক্যামেরার দিকে হাসিমুখে চশমা খুলে তাকান। তারপর ভাতের থালা কাছে টেনে নেওয়ার পোজ দেন। কিন্তু তারপর আর খেতে দেখা যায়নি তাঁকে। ছবি তোলা হয়ে যেতেই উঠে দাঁড়ান সাংসদ।
তারকা সাংসদের এমন আচরণে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বীরভূমে। সোশাল মিডিয়ায় সে ছবি ছড়িয়ে পড়তেই মাঠে নামেন বিরোধীরা। বিজেপির তরফে বলা হয়, সবই ছবি তোলার হুজুগ। গরিবের খাবার মুখে রোচে না। সাজানো থালা ছেড়ে নেত্রীর উঠে যাওয়া নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ শুরু হতে তৃণমূল কর্মীদের দাবি, সাংসদ বাড়ির ভিতরে বসে খেয়েছেন। অতজনের সামনে খাওয়াটা অসুবিধা। তাই ছবি তুলেই উঠে পড়েন।
বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি যুব সাহা বলেন, “উনি খাবেন না সেটা তো জানাই ছিল। ছবি তোলার জন্য শুধু বসেছিলেন ছবি তোলা হয়ে গিয়েছে তাই উঠে গিয়েছেন।”
অন্যদিকে, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় (Malay Mukherjee) বলেন, “হ্যাঁ, উনি খেতে বসে উঠে গিয়েছেন। এটা আমরা খবর পেয়েছি, আমার মনে হয় উনি খেতে বসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাই তিনি উঠে গিয়েছেন।” তাঁর দাবি, বিজেপি যেগুলো বলছে, সেগুলো সমস্ত অপপ্রচার, আর উনি এরকম নন। উনি প্রত্যেকের বাড়িতেই যান। আর এর আগেও উনি অনেকবার অনেক কর্মীদের বাড়িতে খেয়েছেন । তাই তাদের এই কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তারা অযথা জল ঘোলা করার চেষ্টা করছে।