কয়েক লাখ মানুষ এই মেলায় আসেন জিনিস কিনতে, আবার বিক্রি করতেও৷ কেনার আগে দোকানের জিনিস নাড়িয়ে চাড়িয়ে বাজিয়ে দেখে নেন প্রত্যেক ক্রেতা৷ কিছু দোকান দেখলে মনে হবে যেন ধ্বংসস্তূপ, এটা আবার দোকান হয় নাকি! তাহলেই কিন্তু ভুল হবে৷ কারণ ওর মধ্যেও এমন কোনও দামি জিনিস লুকিয়ে রয়েছে যেটা অল্প শিক্ষিত দোকানদার’রা বোঝেন না। আর ক্রেতা তা সামান্য দামেই পেয়ে যেতে পারেন৷ আর সেই কারণে প্রতি বছরই এই মেলায় শুধু দক্ষিন ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) জেলা নয়, আশপাশের জেলা থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান কম দামে ভালো জিনিস কেনার আশায়। এই মেলার আকর্ষণ পুরনো জিনিস। বহুমূল্য পুরনো আসবাব থেকে হাল আমলের ফ্রিজ, এলইডি স্ক্রিন, ডেস্কটপ কিংবা স্মার্টফোন কিনতে ভিড় করেন দূরদূরান্তের মানুষ। মেলার শুরু নিয়ে রয়েছে এক বড় ইতিহাস। নবদ্বীপ থেকে ওডিশা যাওয়ার সময় এখানে রাত্রিবাস করেছিলেন শ্রীচৈতন্য। দিনটি ছিল মকর সংক্রান্তি। সেই থেকেই মকর সংক্রান্তির দিনে এই এলাকায় বহু মানুষের ভিড় হয়। সেই ভিড়কে কেন্দ্র করেই এই মেলার সুত্রপাত।
মেলায় পুরনো জিনিসের বেচাকেনার একটা কারণ আছে। এখানে আসেন মূলত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ। তাঁরা সচরাচর বেশি দাম দিয়ে টিভি, সিডি প্লেয়ার, হোম থিয়েটার বা অন্যান্য দামি সামগ্রী কিনতে পারেন না। কিন্তু এসব জিনিসের শখও রয়েছে, তাই তাঁদের ভরসা এই মেলা। এই মেলাকে তাই স্থানীয় মানুষরা ভাঙা মেলা বা ভাঙাচোরা মেলা বা পুরোনো মেলাই বলে থাকেন৷ তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে পুরনো জিনিসপত্র কিনতে এখানে আসেন শহরের বহু মানুষও। এখন এই মেলায় ধনী-গরিব বা গ্রাম-শহরের বিভেদ আর নেই৷ এই মেলা এক বিশাল সর্বজনীন মেলায় পরিণত হয়েছে বর্তমানে।