এই সময়: নগদ সাড়ে ৬ কোটি টাকা জমা পড়েছিল দু’টি বেসরকারি ব্যাঙ্কের দু’টি অ্যাকাউন্টে। তার পর দ্রুত সেই টাকা সরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অনেকগুলি অ্যাকাউন্টে। স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষকে (Kuntal Ghosh) জেরা করে এবং বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখে এমনটাই জেনেছেন ইডি-র (ED) তদন্তকারীরা। তাঁরা মনে করছেন, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই দুর্নীতির টাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, নগদে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ার পর যাতে কারও সন্দেহ না-হয়, সেই জন্য বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অনেকগুলি অ্যাকাউন্টে- প্রতিটিতে ছোট ছোট অঙ্কে- সেই টাকা পাঠানো হয়েছিল। সাড়ে ৬ কোটি টাকা জমা পড়ে যেখানে, সেই দু’টি বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, এত পরিমাণ নগদ জমা করার সময়ে ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় নথিপত্র চেয়েছিলেন কি না, ঠিক ক’দফায় সেই টাকা জমা করা হয়েছিল আর পরে যে সব অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠানো করা হয়েছিল, সেগুলি কাদের নামে রয়েছে এবং তাঁরা ওই অ্যাকাউন্টগুলির অস্তিত্ব ও টাকা জমা পড়ার কথা জানতেন কি না।

Kuntal Ghosh : অর্পিতার ফ্ল্যাটে নোটের পাহাড়ে কি কুন্তল যোগ?
গোরু পাচার মামলার (Cattle Smuggling Case) তদন্তে উঠে এসেছে, সিউড়ির কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে এমন অনেকের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, যাঁরা ওই সব অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব এবং টাকা জমা পড়ার কথা জানতেন না। সিবিআইয়ের বক্তব্য, কেবল তাঁদের নথি কোনও ভাবে জোগাড় করে সে সব দিয়ে ওই অ্যাকাউন্টগুলো খুলে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়েছে গোরু পাচারের কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্যে। ই-নাগেটস গেমিং অ্যাপ প্রতারণা মামলাতেও ইডি-র তদন্তে উঠে এসেছে যে, দ্রুত অসংখ্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়েছে প্রতারণার কোটি কোটি টাকা।

ED Raid: বিলাসবহুল আবাসন-অফিসে হানা, কলকাতা জুড়ে ED-এর ম্যারাথন তল্লাশি
ইডি সূত্রের দাবি, স্কুলে শিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রায় ১৯ কোটি টাকা নেওয়ার কথা জেরায় স্বীকার করেছেন কুন্তল। সেই টাকার সিংহভাগ তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে পাঠাতেন, নিজের ‘শেয়ার টুকু’ বাদ রেখে। ইডি সেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খোঁজ চালাচ্ছে। যে সব বাড়ি, ফ্ল্যাট বা অফিস খুলে চাকরিপ্রার্থীদের ও নিজের এজেন্টদের সঙ্গে কুন্তল মিটিং করতেন, সেগুলির দিকেও ইডি-র নজর রয়েছে। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই চিনার পার্কে কুন্তলের দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন। তবে ইডি-র দাবি, আরও বহু আবাসনে কুন্তলের বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট ও অফিস ছিল। সেগুলোর হদিশ মিললে ইডি-র কাজ হবে, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং রেজিস্টার খাতা রয়েছে কি না, সেটা জানা। তা হলে সেই সব জায়গায় কারা যাতায়াত করতেন, তাঁদের খোঁজ মিলতে পারে, এমনটাই তদন্তকারীদের বক্তব্য।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version