শ্যামগোপাল রায়
এক খুনি ও লুটেরাকে ধরতে ‘সন্ধান চাই’ পোস্টার ফেসবুকে দিয়ে ইনাম ঘোষণা করেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। যিনি ওই খুনির সন্ধান দিতে পারবেন, ইনাম হিসেবে তাঁকে দেওয়া হবে নগদ ১০ হাজার টাকা, এমনটাই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। মাস দুয়েক আগে দমদমের ছাতাকল এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা মুনমুন পাল তাঁর বাড়ির সামনের অংশে থাকা বাগান সাফাইয়ের জন্য এক যুবককে বাড়ির ভিতর ঢুকতে দিয়েছিলেন। পুলিশের বক্তব্য, ওই যুবকই ভারী কোনও বস্তু দিয়ে তাঁকে আঘাত করে খুন করে সোনার গয়না-সহ বাড়ির বেশ কিছু সরঞ্জাম লুট করে চম্পট দেয়। সেই যুবককে এখন জালে তুলতে চাইছে পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তাদের বক্তব্য, সামাজিক মাধ্যমে পোস্টার দিয়ে ওই খুনিকে যেমন ধরতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই এর মাধ্যমে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিও আটকানো যাবে। ফেসবুক পোস্টে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের তরফে ওই ব্যক্তির অপরাধের ধরন তুলে ধরার পাশাপাশি তাঁর চেহারার বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে।

Road Accident: মধ্যরাতে বারাসত চাঁপাডালি মোড়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মৃত ২
সাধারণ মানুষের কাছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আবেদন, নারকেল গাছ ও বাগান পরিষ্কার করা কিংবা পুরোনো জিনিস কেনার নাম করে কেউ বাড়িতে ঢুকতে চাইলে এমন কাউকেযেন আচমকা ঢুকতে না-দেওয়া হয়। কারণ, বাগান সাফাইয়ের নাম করে বাড়ির ভিতরে ঢুকে এক যুবক সুযোগ বুঝে মাথায় ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করে যাবতীয় মূল্যবান জিনিস নিয়ে চম্পট দিতে পারে। মূলত প্রবীণ মানুষরা ওই যুবকের ‘টার্গেট’। ওই যুবকের আনুমানিক উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, গায়ের রং শ্যামলা। এমনকী, ওই যুবকের খোঁজ যিনি দেবেন, তাঁর নাম-পরিচয়ও গোপন রাখা হবে বলে ব্যারাকপুর কমিশনারেট জানিয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর দমদমের ছাতাকলের বাসিন্দারা রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধা মুনমুন পালকে পড়ে থাকতে দেখে ভেবেছিলেন, কোনও ভাবে পড়ে গিয়েই এমনটা হয়েছে। তবে নাগেরবাজারের একটি হাসপাতালে ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। তাঁরা মুনমুনের পড়শিদের জানান, প্রৌঢ়ার মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Uttar 24 Pargana News : জঙ্গল থেকে উদ্ধার মহিলার দেহ! ১২ ঘণ্টার মধ্যে খুনের কিনারা পুলিশের
হাসপাতালের তরফেই খবর দেওয়া হয় নাগেরবাজার থানায়। দেহটি দেখার পর ময়নাতদন্ত করানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ভারী কোনও বস্তুর আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে মুনমুনের। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাতাকলের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা অমলকৃষ্ণ পাল ও তাঁর স্ত্রী মুনমুন। ওই দম্পতির দুই মেয়েই কলকাতার বাইরে থাকেন। মুনমুনকে যখন খুন করা হয়, সেই সময়ে তাঁর স্বামী অমলকৃষ্ণ দোতলায় ছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, এক সাফাইকর্মী ছাড়া মুনমুনের বাড়িতে আর কেউ সেই সময়ে ঢোকেনি। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ওই সন্দেহভাজনের ছবি পেলেও তার পরিচয় জানা যায়নি। তবে পুলিশের দাবি, ওই সন্দেহভাজন এখন দমদম এলাকাতেই রয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, কাঁধে একটি ব্যাগ এবং হাফ প্যান্ট ও হাফহাতা টি-শার্ট পরে ওই যুবককে দমদমের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতেও দেখা গিয়েছে। যা থেকে তদন্তকারীদের আশঙ্কা, ফের কোনও প্রবীণ বাসিন্দাকে টার্গেট করতে পারে ওই যুবক। সেই জন্যই সামাজিক মাধ্যমে এই পোস্টার দেওয়ার সিদ্ধান্ত। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলছেন, ‘আশা করছি, খুব শিগগিরি ওই যুবককে আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version