এই সময়: শিল্প গড়তে জমি নিয়ে যাঁরা ফেলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে শো-কজ় করার নির্দেশ দিল নবান্ন। সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী রাজ্যের ইকনমিক করিডর ও শিল্প সংক্রান্ত জমি নিয়ে জেলাশাসক ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার বা উন্নয়ন সংস্থার থেকে শিল্পের জন্য জমি নিয়ে ফেলে রাখা যাবে না। যাঁরা নির্মাণ শুরুই করেননি, তাঁরা শো-কজ়ের উপযুক্ত জবাব দিতে না-পারলে প্রয়োজনে জমি কেড়েও নেওয়া হতে পারে। কোথায়, কাদের হাতে এ ধরনের জমি রয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে তার সমীক্ষাও করিয়েছে সরকার। রাজ্যে আগামী দিনে বৃহত্তর শিল্প বিনিয়োগের কথা ভেবে জমির সংস্থান করতেই এই উদ্যোগ বলে শিল্পদপ্তরের কর্তাদের ব্যাখ্যা। নবান্নের নজরে এসেছে, কিছু শিল্পসংস্থা জমি নিয়ে কারখানা করার পর কিছু দিন তা চালিয়ে, বন্ধ করে চলে যাচ্ছে। তাতে আখেরে রাজ্যের কোনও লাভ হচ্ছে না। কেউ আবার কারখানাও করেনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তবে যে সব চালু শিল্পসংস্থা সরকারের অনুমতি নিয়ে শিল্প সম্প্রসারণের জন্য নেওয়া জমি ফেলে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।

Digitization Of Land Records : দলিলের ডিজিটাইজেসন দু’বছরে
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বা শিল্প দপ্তরের আধিকারিকরা ফেলে রাখা এ ধরনের জমি প্রয়োজনে কেড়ে নেওয়ার কথা একাধিক বৈঠকে বলেছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজস্ব বাড়াতে উন্নয়ন সংস্থাগুলি সল্টলেক ও কল্যাণী বাদে রাজ্যের সর্বত্র লিজ়ে দেওয়া সব ধরনের জমির নিঃশর্ত মালিকানা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। তার মধ্যেই অব্যবহৃত শিল্পের জমি প্রয়োজনে কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য। এ দিনের বৈঠকে রাজ্যের শিল্প, ক্ষুদ্র-মাঝারি-কুটির শিল্প এবং ভূমিরাজস্ব দপ্তরের সচিব এবং বেশ কয়েকটি জেলার জেলাশাসক উপস্থিত ছিলেন। নবান্ন সূত্রের দাবি, ভূমিরাজস্ব দপ্তরের সচিব বৈঠকে জানান, ওয়েস্ট বেঙ্গল এস্ট্যাব্লিশমন্ট রিকুইজ়িশন অ্যাক্টে শিল্পের জন্য যারা জমি নিয়ে ফেলে রেখেছে, তাদের নোটিশ দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, জমি নেওয়ার পর তিন বছরের মধ্যে উৎপাদন শুরু করতে হয়। নইলে শর্তমাফিক জমি কেড়ে নেওয়ার সংস্থান আইনে রয়েছে। কোনও সংস্থা উৎপাদন শুরু করতে না-পারলেও, কাজ শুরু করেছে, এমনটা দেখা গেলে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখে রাজ্য সরকার। এই সময়ে প্রশ্ন ওঠে, কিছু সংস্থাকে শিল্পের নামে দেওয়া জমির সবটাই সরকারের খাস জমি নয়। অনেক সময়ে কৃষিজমিও থাকে। মুখ্যসচিব বলেন, ‘সে ক্ষেত্রেও জমি কেড়ে কৃষিজমির পাট্টা স্থানীয় ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কোনও ভাবেই শিল্পের নামে জমি নিয়ে ফেলে রাখা যাবে না।’

Mamata Banerjee : ‘কাজ শেষ হলে বীরভূমে আলো জ্বলবে…’, দেউচার ক্ষোভ প্রশমনে কৌশলী মমতা
এদিকে শেয়ার বাজারে আদানি গোষ্ঠীর প্রায় সব শেয়ারের দাম পড়লেও তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর তারাই তৈরি করবে বলে রাজ্য সরকার এখনও আশাবাদী। তাই এই বন্দরকে কেন্দ্র করে পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ এখন থেকে শুরু করে দিতে চায় নবান্ন। এ জন্য তাজপুর থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা ৫০০ কিলোমিটার জুড়ে তিনটি অর্থনৈতিক করিডর তৈরির প্রস্তাব রয়েছে রাজ্যের। এ দিনের বৈঠকেও মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের বলেন, এই করিডরের দু’পাশে পরে থাকা অ-কৃষিজমিকে এখনই চিহ্নিত করতে হবে। সেখানে শিল্পতালুক গড়ে তুলতে উৎসাহিত করতে হবে। বিশেষ করে সিমেন্ট, ভোজ্য তেল, লোহা আকরিক শিল্পের উপযোগী শিল্প বা অনুসারী শিল্প বিকাশে উৎসাহিত করতে হবে। যদি এই অঞ্চলে শিল্পতালুক বা কারখানা থাকে, তা হলে তাদের কাছে সরকারের ‘স্কিম ফর অ্যাপ্রুভড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে’র(এসএআইপি) সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version