West Bengal Local News : অভিযোগ গুরুতর। কলেজে ক্লাস হয় না, TIC-র রুমে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সময়ে ক্লাসের দরজা খোলে না, দেওয়া হয় না রুটিনও। পদে পদে অসহযোগিতার শিকার প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রীকে। এক দৈনিক সংবাদপত্রের মতামত বা বলা ভালো, চিঠি বিভাগে প্রকাশিত এই ‘অভিযোগ’ নিয়ে রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় সর্বত্র। ভাইরাল হয় ছাপা হরফে বের হওয়া ওই চিঠির অংশ। মুহূর্তে শেয়ার হতে থাকে তা। এমনকী জেলা থেকে কলকাতার শিক্ষকমহলের একাংশও সামাজিক মাধ্যমে এই চিঠি নিয়ে নানা মত ব্যক্ত করেন। কিন্তু, কলেজ কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন। পালটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
কী ছিল চিঠির বয়ান…
মালদার চাঁচলের (Malda Chanchal) জনৈকা মিনু খাতুন লিখছেন, ‘উত্তর মালদার এক প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হিসেবে সেখানকার একমাত্র শিক্ষা কেন্দ্র চাঁচল কলেজে গিয়েছিলাম পড়াশোনার জন্য। প্রতিদিন বাসভাড়া বাবদ খরচ হয় ২০ – ২৫ টাকা। তবে ১১ টা ১১টা ৩০ মিনিটের সময়ও ক্লাসরুমের দরজা খোলা হয় না। প্রায় ৩০ – ৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পর কোনও দরজা অশিক্ষক কর্মীরা খুলে দেন। এডুকেশন, ইতিহাস, সোশিওলোজি, ভূগোল, ইংরেজি – কোনও সেমিস্টারেরই ক্লাস হয় না।
প্রত্যন্ত গ্রামে থাকি। বাসের ভাড়া জোগাড় করাটাই কষ্টকর। অথচ এডুকেশনের শিক্ষকরা কলেজে আসেন না। আমরা বুঝতে পারি না কখন, কোন ক্লাস হবে। অনেক খুঁজে যদি এডুকেশনের ক্লাস খুঁজে পাই, তখন দেখি সেখানে বহিরাগত ছেলেমেয়েরা বসে রয়েছেন। ক্লাসরুমে গল্পগুজব চলছে। রুটিন চাইতে গেলে শিক্ষকরা বলেন, দেওয়া হবে না। টিআইসির রুমে গেলে শিক্ষকরা আমাদের তাড়িয়ে দেন। অনেক ম্যাডাম আছেন, যাঁরা বেশিরভাগ সময় কলকাতায় থাকেন। ইংরেজি বিভাগে কোনও শিক্ষক নেই। লাইব্রেরি থেকে কোনও বই দেওয়া হয় না।’
চাঁচল কলেজের বক্তব্য…
বিষয়টি নিয়ে ‘এই সময় ডিজিটাল’– এর পক্ষ থেকে যোগাযাগ করা হয়েছিল কলেজের টিআইসি অজিত বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যাঁর নামে ওই চিঠি প্রকাশিত হয়েছে, আমাদের কলেজে এমন কোনও ছাত্রীই নেই। একবার নয় বার বার করে আমি নিজে খুঁজে দেখেছি। এমনকী যে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, পুরোপুরি ভিত্তিহীন। কলেজের প্রত্যেকে বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। আমাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে এই অপপ্রচার করা হয়েছে। এর কারণ আমরাও জানি না। ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আরও যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হচ্ছে।
চাঁচল কলেজ এবং অভিযোগনামা…
চাঁচল কলেজ নিয়ে যদিও অভিযোগের বহর কম নয়। কলেজে রাজনৈতিক সংঘর্ষ থেকে দেদার টুকলি, পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে বার করার মতো গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন উত্তর মালদার এই কলেজকে বারবার খবরের শিরোনামে নিয়ে এসেছে। তবে পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক অধ্যাপিকা প্রত্যেকেই মানছেন, এখানে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা গুরুতর। এই বদনাম মেনে নেওয়া যায় না। এক অধ্যাপক বলছিলেন, ‘ছিল রুমাল, হয়ে গেল বিড়াল!’
কী বলছে পুলিশ?
চাঁচল থানার আইসি বলছেন এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ‘এই নিয়ে একটি জেনারেল ডায়েরি হয়েছে।’ যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, এই নিয়ে একমাত্র মানহানির মামলা করা যায়। তাতেই দ্রুত ন্যয় পাওয়া সম্ভব।