তাপস প্রামাণিক
শব্দদানবের হাত থেকে মানুষকে রেহাই দিতে বাংলা জুড়ে অত্যাধুনিক মানের সাউন্ড মিটার বসাবে রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। এর মাধ্যমে আরও নিখুঁত ভাবে শব্দদূষণের মাত্রা জানা যাবে। ঠিক কোন জায়গা থেকে শব্দদূষণ ছড়াচ্ছে, সেটাও চিহ্নিত করা যাবে। ফলে চটজলদি ব্যবস্থাও নিতে পারবে প্রশাসন।

Kolkata Underpass : যানজট কমাতে বড় পদক্ষেপ, নিউটাউনে চালু হল দেশের প্রথম দোতলা আন্ডারপাস
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে মোট ১০০০ সাউন্ড লেভেল মিটার বসানো হবে। সেগুলোয় ক্লাউড প্রযুক্তির সাহায্যে জিও লোকেশন ট্যাগিং করা থাকবে। তার সঙ্গে যুক্ত থাকবে প্রিন্টার। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সাউন্ড মিটারে কোনও একটি নির্দিষ্ট স্থানের শব্দের মাত্রা ধরা পড়বে। তার প্রিন্টআউটও সংগ্রহ করা যাবে। পুলিশ, পরিবহণ দপ্তর এবং পুরসভার আধিকারিকরা অফিসে বসেই কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কোথায় কতটা শব্দদূষণ হচ্ছে, দেখতে পাবেন। চাইলে তাতে অ্যালার্ট সিস্টেমও যোগ করা যেতে পারে। কোনও জায়গায় শব্দের মাত্রা বেশি হলেই মেল কিংবা SMS-এ সতর্কবার্তা চলে যাবে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, শব্দদূষণ ঠেকানোর জন্য ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলিতে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও ভারতে তেমন প্রকল্প এই প্রথম। রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা, এখন যে পদ্ধতিতে শব্দের মাত্রা মাপা হয়, তাতে তার সঠিক উৎসস্থল বোঝা যায় না। কিন্তু নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে সেটা সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। এর ফলে শব্দদূষণ রোধে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করতে প্রশাসনের সুবিধা হবে। এই প্রকল্প রূপায়ণ করবে তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের অধীনস্থ ওয়েবেল টেকনোলজি লিমিটেড।

Nabanna : ফেলে রাখা শিল্প-জমি দরকারে কাড়বে রাজ্য
জানা গিয়েছে, রাজ্য পুলিশকে (West Bengal Police) দেওয়া হচ্ছে ২০০টি সাউন্ড মিটার। এছাড়াও রাজ্যের ৭টি পুলিশ কমিশনারেটকে (কলকাতা, আসানসোল-দুর্গাপুর, ব্যারাকপুর, বিধাননগর, চন্দননগর, হাওড়া এবং শিলিগুড়ি) গড়ে ৫০টি করে সাউন্ড মিটার দেওয়া হবে। দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আসানসোল-সহ রাজ্যের মোট ১২৯টি পুরসভাকে একটি করে সাউন্ড মিটার এবং একটি করে ক্যালিব্রেটর দেওয়া হচ্ছে। কসবা ট্রান্সপোর্ট ডিরেক্টরেটরের জন্য ৩০০টি সাউন্ড লেভেল মিটার এবং ক্যালিব্রেটর দেওয়া হবে। এরপরে যা পড়ে থাকবে, সেগুলো রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হেফাজতে থাকবে।

Digitization Of Land Records : দলিলের ডিজিটাইজেসন দু’বছরে
পরিবেশকর্মী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, “ক্লাউড সাউন্ড ম্যাপিং এক ধরনের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এতে সব রকমের আওয়াজের সঠিক পরিমাপ করতে পারব আমরা। কোথা থেকে তার উৎপত্তি হচ্ছে, সেটাও জানা যাবে। যে কোনও সরকারি নীতি তৈরির ক্ষেত্রে এটা খুবই সহায়ক হবে। দেখা যায়, কোথাও অতিরিক্ত শব্দের জন্য চাষবাসের ক্ষতি হচ্ছে। সেটা আগে থেকে জানা গেলে তার মোকিবিলা করতে সুবিধা হবে।”

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত অবশ্য এটাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, “শব্দদূষণ রোধে প্রশাসনকে আরও সজাগ হতে হবে। সেটা না করে শুধু যন্ত্রপাতি কিনে কোনও লাভ হবে না। এটা স্রেফ লোকদেখানো।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version