আদালতের নির্দেশে গ্রুপ ডি পদে ১,৯১১ জনের প্যানেল বাতিলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে ১,৪৪৪ জনের নিয়োগের সম্ভাব্য প্যানেল প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC। কমিশনের চেয়ারম্যানের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই তালিকা পরিবর্তনযোগ্য। পাশাপাশি তা শূন্যপদ এবং যোগ্যপ্রার্থী পাওয়ার উপরও নির্ভর করছে। তাই একে চূড়ান্ত তালিকা বলে ধরা উচিত নয়। যথাযথ সময়ে যোগ্য প্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের তালিকা প্রকাশ করা হবে। যদিও আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, সম্ভাব্য যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তা রাজ্যভিত্তিক। অথচ ২০১৮-১৯ সালে জেলাভিত্তিক নিয়োগ হয়েছিল। অপেক্ষমান মেধাতালিকাও ছিল তা-ই।
ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশে নবম-দশমে যে ৮০৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের জায়গায় ওয়েটিং লিস্ট থেকেই প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের অভিযোগ, অনেক বিষয়ে ওয়েটিং লিস্ট এখনও চূড়ান্ত নয়। SSC-র বিধি অনুযায়ী ১০টি শূন্যপদের নিরিখে ১৪ জনের থাকার কথা থাকলেও ওয়েটিং লিস্টে সেই হিসেব মানা হয়নি।
যেমন, অঙ্কে সাধারণ ক্যাটেগরিতে পুরুষ বা মহিলাদের ওয়েটিং লিস্টে প্রার্থী কম থাকায়, তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ে অপেক্ষমান তালিকার সকলের চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, জেনারেল ওয়েটিংয়ের তালিকাভুক্ত শুধু মহিলারা নিয়োগ পেয়েছেন ষষ্ঠ দফার কাউন্সেলিংয়েও। ফলে এখন কোনও পুরুষ বা মহিলা প্রার্থী সাধারণ ক্যাটেগরির ওয়েটিং লিস্টে নেই। তা হলে যে ৮০৩টি পদ ওয়েটিং লিস্ট থেকে পূরণ করতে হবে, তার মধ্যে অঙ্কে জেনারেল ক্যাটেগরিতে পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে মোট পদ ৪৫টি। এখন এই সব পোস্টে কমিশন কাদের চাকরি দেবে, সেটা নিয়ে নিয়ে হয়েছে ধন্দ।
এ ভাবে হিসেব করলে দেখা যাবে, মাধ্যমিকের সাতটি বিষয়ে প্রায় ৩৫০-৪০০ পোস্টের জন্য কোনও প্রার্থীই নেই। সে কারণে এই পদগুলি পূরণ করতে হলে ওয়েটিং লিস্টটাই বদলাতে হবে। যাঁরা দুর্নীতি করে মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন, তাঁদের জন্যই এই গোলমাল। এ ক্ষেত্রে আশার কথা একটাই, তা হলো অপেক্ষায় থাকা সাধারণ ক্যাটেগরিতে বেশি সংখ্যক অপেক্ষমান পুরুষ ও মহিলা প্রার্থীরা সুযোগ পাবেন। এঁরা অবশ্য সংরক্ষিত ক্যাটেগরি, অর্থাৎ SC, OBC-এ কিংবা OBC-বি’তে স্থান পেয়েছেন। সুতরাং সমস্যার সমাধান করে যোগ্য ও মেধাবীদের চাকরি দিতে হলে, কমিশনকে এখন অনুপাত মেনে ওয়েটিং লিস্ট ঠিক করতে হবে। না হলে কোর্টে ফের মামলার আশঙ্কা। যদিও বিকাশ ভবনের দাবি, এ পর্যন্ত শূন্যপদের ভিত্তিতে অনুপাত মেনেই প্যানেল তৈরি হয়েছে।
চাকরিপ্রার্থী প্রকাশ ঘোষের কথায়, “৯৫২ জনের মধ্যে কমিশন আগে ৮০৩ জনকে সুপারিশ করেছিল। বাকি ১২১ জনের চাকরির সুপারিশই করেনি। অর্থাৎ, এঁরা ওয়েটিংয়ে আছেন। পাশাপাশি সকলের র্যাঙ্কেও পরিবর্তন হবে। দুর্নীতি করে যাঁরা মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছিলেন, তাঁদের বাতিল করলে, পুরো ওয়েটিং লিস্টই পরিবর্তন করতে হবে।” জেনারেল ক্যাটেগরিরর কাট অফ মার্কসেও পরিবর্তন হবে। যার জেরে অন্যান্য ক্যাটেগরি অর্থাৎ সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থীরা জেনারেল বা সাধারণ ক্যাটেগরিতে র্যাঙ্ক পাবেন। যদিও আইনজীবীদের একাংশের দাবি, সার্বিক ভাবে নতুন মেধাতালিকা তৈরির প্রক্রিয়া হবে অন্যায্য ও যুক্তিহীন।