বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বউবাজার এলাকার মাটিতে বালির পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ। সেই জন্য ওই এলাকার মাটি সছিদ্র এবং তার ফলে সামান্য এ দিক-ও দিক হলেই মাটিতে ধস নামে। ২০১৯-এর অগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পর পর তিন বার ওই এলাকায় ধস নেমে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজে বড় রকমের বিপর্যয় ঘটেছে। সুড়ঙ্গে যাতে যাত্রীদের শ্বাস নিতে সমস্যা না-হয়, সেই জন্য ক্রমাগত হাওয়া পাম্প করার ভেন্টিলেশন শাফ্ট তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল ওয়েলিংটন স্কোয়ারে। একই সঙ্গে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জোড়া সুড়ঙ্গ থেকে যাত্রীদের বাইরে বার করে আনতে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর একটি করে মাইক্রোটানেল তৈরির নকশাও করা হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, ওয়েলিংটন স্কোয়ারের ভেন্টিলেশন শাফ্টে এসে মিশবে একটি মাইক্রোটানেলও। কিন্তু শাফ্ট তৈরির কাজ যখন প্রায় শেষের মুখে, সেই সময়েই সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থা আইটি-আইটিডি সেমের যৌথ উদ্যোগের প্রযুক্তিবিদরা ধসের আশঙ্কায় বেঁকে বসেন। তাঁরা ওয়েলিংটন স্কোয়ারে কাজ বন্ধ রেখে নতুন কোনও ‘শক্ত মাটির’ জায়গার খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু এতটা সময় ও এত অর্থ খরচের পর নতুন জায়গায় নতুন করে কাজ শুরুর প্রস্তাব মেনে নেয়নি কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)।
ফলে, ওয়েলিংটন স্কোয়ারেই গ্রাউন্ড ফ্রিজ়িং পদ্ধতির প্রয়োগ করার ভাবনা শুরু হয়। প্রযুক্তিবিদরা জানাচ্ছেন, এই পদ্ধতিতে মাটির নীচে নির্দিষ্ট জায়গায় তরল নাইট্রোজেন পাম্প করা হবে। তরল নাইট্রোজেনের তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রির কাছাকাছি। ওই তাপমাত্রায় মাটির গভীরে নির্দিষ্ট অংশ জমে কঠিন হবে। ধস নামবে না, জলও ঢুকতে পারবে না। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে নরওয়ের একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে নির্মাতা ঠিকাদার সংস্থার।