চন্দননগরের দুর্গাচরণ রক্ষিত স্কুলের সুনাম রয়েছে। অসংখ্যবার এই স্কুলের ছাত্ররা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে এক থেকে দশের মধ্যে থেকেছে। সেই স্কুলের এমন দৈন্য দশা স্বাভাবিকভাবে প্রাক্তনীদের মন খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই স্কুলে ছাত্র সংখ্যা কমছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। অথচ স্কুলে শিক্ষকের কোনও অভাব নেই। ১৫০ জন ছাত্রকে পড়ানোর জন্য স্কুলে রয়েছে ৪০ জন শিক্ষক।
যেখানে অনেক সময়ই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষকের ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সেখানে চন্দননগরের এই স্কুলে সম্পূর্ণ উলটো ছবি ধরা পড়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিকাঠামোর কোনও অভাব নেই। ছাত্রের অভাবে একাধিক ক্লাস রুম ফাঁকা পরে থেকে নষ্ট হচ্ছে। স্কুল ভবনের একাংশ ব্যবহার না হওয়ার কারণে ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে।
দুর্গাচরণ রক্ষিত স্কুলে প্রত্যেক বছর গড়ে ৬০ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও এই বছর সংখ্যা কমে ১১ হয়েছে। স্কুলে শিক্ষকের অভাব নেই, নেই পরিকাঠামো গত কোনও ত্রুটিও। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে কেন স্কুলের ছাত্র সংখ্যা এমন তলানিতে ঠেকল? শিক্ষককদের মতে, ছেলেময়েদের ইংরিজি মাধ্যম স্কুলে পড়ানোর ঝোঁক বেড়েছে অভিভাবকদের। বাংলা মাধ্যম সব স্কুলেই ছাত্র কমছে।
রক্ষিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস কুমার মণ্ডল এই প্রসঙ্গে বলেন, “যেসব অভিভাবকদের সামর্থ্য আছে তারা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করছেন।যার ফলে বাংলা মাধ্যম স্কুলে ছাত্র সংখ্যা কমছে। সেই কারণেএই স্কুলেও কমেছে। আলাদাভাবে লটারি না করে পুরসভা যদি কেন্দ্রীয়ভাবে লটারি করে তারপর ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে ভাগ করে দেয় তাহলে সুবিধা হয়”
চন্দননগর পুরসভা এই স্কুলটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। পুরসভার অধীনে ওই এলাকায় মোট ছয়টি স্কুল রয়েছে। চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “কানাইলাল অরবিন্দ বঙ্গ বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা মনস্থির করেছেন। রক্ষিত স্কুলের ক্ষেত্রে অনেক সময় আমাদের অভিযোগ শুনতে হয় যে শিক্ষকদের ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সবাই মিলে উদ্যোগ নিলে ভালো হয়।”