টাকার বিনিময়ে শিক্ষক বদলির অভিযোগে তদন্তে এ বার শিক্ষা দপ্তর। তদন্তের কেন্দ্রে নদিয়া। সেখানে বিধি-বহির্ভূত ভাবে চার-পাঁচ বছর ধরে পছন্দসই জায়গায় বদলির বন্দোবস্তে বেশ কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, বদলি-পিছু পাঁচ লাখ বা তার বেশি টাকার হাতবদল হয়েছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের বিভিন্ন মহল থেকে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ায় বছর তিনেক আগেই শিক্ষা দপ্তর ও জেলা প্রশাসন প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছিল। তাতে কাজের কাজ তেমন হয়নি। তবে সোমবারই ফের নদিয়ার ডিআইয়ের কাছে নির্দেশ এসেছে, এ ব্যাপারে সব নথি যেন বিকাশ ভবনে পাঠানো হয়। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইডি’র আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগ দুর্নীতির সমান্তরালে সক্রিয় ছিল অর্থের বিনিময়ে বদলির চক্রও।
সরকারি সূত্রে খবর, অভিযোগের তির মূলত ডিআই অফিসের দু’জন কর্মীর বিরুদ্ধে। তাঁদের এক জন আপার ডিভিশন ক্লার্ক অমিতাভ সরকার। অন্য জন লোয়ার ডিভশন ক্লার্কের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। ২০২০-র ২০ মার্চ বিকাশ ভবন থেকে শিক্ষা দপ্তরের যুগ্মসচিব তৎকালীন ডিআইকে চিঠি দিয়ে ওই অফিসের দু’জন কর্মীর বিরুদ্ধে ওঠা ‘দুর্নীতি’র অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ফের সে বছরই ১৪ সেপ্টেম্বর স্কুল শিক্ষা কমিশনারেটের ডেপুটি ডিরেক্টর (প্রশাসন) নদিয়ার ডিআইকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, ‘অমিতাভ সরকার ও অন্য এক কর্মীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত ৭ দিনে শেষ করে রিপোর্ট জমা দিন।’
শিক্ষাকর্তাদের এত চিঠিপত্র-তাগাদার নিট ফল কী?
নদিয়ার ডিআই দিব্যেন্দু পাল বলেন, ‘আমি সে সময়ে ছিলাম না। এই অফিসে যোগ দিয়েছি ২০২২ সালে। তবে সোমবারই নতুন করে শিক্ষা দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে নথিপত্র চেয়েছে। সব দেখা হচ্ছে।’ ডিআই অফিসে এখনও কর্মরত অমিতাভর দাবি, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশে কিছু লোক বেনামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি ও ব্যবসারও তো অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে? অভিযোগ, বদলির জন্যে কয়েক লাখ করে নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদের এরিয়ার মেটাতেও ২০ শতাংশ করে কাটমানি নেওয়া হয়েছে বা সাধারণ ফাইল ছাড়তেও চার-পাঁচ হাজার টাকা? অমিতাভর জবাব, ‘যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের আড়ালে না থেকে সামনে আসতে বলুন। আইন আইনের পথেই চলবে।’