গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন হাসপাতাল ও ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের আকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। সারা বছরই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির চলে। কিন্তু, রক্তদান শিবির থেকে পাওয়া কার্ড দেখিয়েও মিলছে না রক্ত। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে। এই নিয়ে বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের রক্ত দেওয়া রক্তদাতাদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। তাঁদের অভিযোগ, রক্ত দিয়ে পাওয়া কার্ড কোনও ব্লাডব্যাঙ্কে নিয়ে গেলেও মিলছে না রক্ত। ব্ল্যাডব্যাঙ্কের তরফে তাঁদের ডোনার নিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Raiganj Medical College Hospital : সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কেও দালালরাজ! রক্তের জন্য ৩ হাজার টাকার দাবি, তারপর…
রক্তদাতাদের অভিযোগ, রক্তদান শিবিরে রক্ত দিয়ে পাওয়া কার্ডের কোনও মূল্যই নেই যদি না সেগুলি বিপদে আপদে ব্যবহার করা যায়। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাডব্যাঙ্কে ডোনার নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে রক্ত। রক্তদান শিবির আয়োজনকারী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের সদস্যরা জানিয়েছন, ব্লাড কার্ড থেকে রক্ত না পাওয়ার কারণে রক্তদাতাদের আগ্রহ কমছে। তাঁদের আরও অভিযোগ মাঝেমধ্যে ব্লাডব্যাঙ্কগুলি থেকে রক্তের কালোবাজারির খবর সামনে আসে, রক্তের অপ্রতুলতার জন্য সেটাও অন্যতম বড় কারণ। রক্তদাতার অভাবের কারণে জেলার ব্লাডব্যাঙ্কগুলি ক্রমশ রক্তশূন্য হয়ে পড়েছে।

Alipurduar News : শূন্য ব্লাডব্যাঙ্ক, পরিদর্শনে এসে রক্ত দিলেন খোদ মহকুমাশাসক
শুধু সাধারণ উপভোক্তারাই নয়, রক্তের অভাবের কারণে সমস্যার মধ্যে পড়ছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে সেখানে ভর্তি থাকা রোগীদের পরিবারকেও হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কও একই সমস্যার মুখোমুখি। কর্তৃপক্ষের আশা আরও গরম পড়লে রক্তদান শিবির শুরু হবে, তখন হয়তো সমস্যা খানিক সমাধান হবে। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে রক্তদান নিয়ে সচেতনা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন তারা।

বালুরঘাট শহরের বাসিন্দা এক তৃণমূলকর্মী এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রত্যেক বছর আমরা রক্তদান শিবির আয়োজন করি। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই সেখানে রক্তদাতার সংখ্যা ক্রমশ কমছে। দামি উপহার না দিলে আজকাল আর কেউ রক্ত দিতে চায় না। সেই কারণে রক্তদান শিবিরও সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে।”

Didir Suraksha Kawach : ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে বিশেষ পন্থা জেলা সভানেত্রীর, ভিক্ষুকদের স্বনির্ভর করতে ওজন যন্ত্র প্রদান
দক্ষিণ দিনাজপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য দুলাল বর্মন বলেন, “চাহিদার অনুপাতে নতুন রক্তদাতা সেই হারে তৈরি হচ্ছে না। চারিদিকে রক্তের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এত প্রচার সত্ত্বেও অনেকেই এখনও রক্তদানে পিছিয়ে রয়েছেন। যদিও প্রতিবছর গরমের সময় রক্তের ঘাটতি থাকে। তবে এবছর গরম শুরুর আগেই রক্তের যোগান কমে গিয়েছে।”

কয়েকমাস আগেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রক্ত বিক্রির অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কালোবাজারিও রক্তদাতাদের আগ্রহ কমানোর অন্যতম বড় কারণ বলে জানিয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের কাছে যে রক্ত আসে তা থ্যালাসেমিয়া রোগী ও আপৎকালীন রোগীদের দিতেই শেষ হয়ে যায়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version