সকাল সকাল কাতারে কাতারে মানুষ বসে পড়েছেন রেল লাইনে। চার জেলার একাধিক স্টেশন চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ বসে গান বাজনা করছেন কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন। এর জেরে স্টেশনে স্টেশনে আটকে পড়েছে ট্রেন। মাঝরাস্তায় আটকে পড়ে চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা।
বাঁকুড়ার একাধিক এলাকায় বিপর্যস্ত পরিষেবা
কুড়মি সমাজের রেল অবরোধের ব্যাপক প্রভাব পড়ল বাঁকুড়া জেলার রেল পরিষেবায়। বুধবার সকাল থেকে খড়্গপুর-আদ্রা শাখায় একের পর এক ট্রেন বাতিল হয়েছে। এদিন পুরুলিয়া- হাওড়া পুরুলিয়া এক্সপ্রেস পুরুলিয়ার বদলে আদ্রা থেকে হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দেয়।
এছাড়াও আসানসোল-রাঁচি মেমু স্পেশাল, খড়গপুর হাটিয়া এক্সপ্রেস, টাটানগর ঝাড়গ্রাম মেমু স্পেশাল ট্রেন সহ দক্ষিণ পূর্ব রেলের একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল।
পুরুলিয়ায় দুর্ভোগ
অন্যদিকে, পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ছাড়াও বেশ কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার একাধিক ট্রেনের রুট ‘ডাইভার্ট’ করে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে সকাল থেকেই বাঁকুড়া স্টেশনে শুরু হয়েছে যাত্রী দুর্ভোগ। একাধিক ট্রেন বাতিল ঘোষণা করায় যাত্রীদের একটা অংশ স্টেশনে এসেও ট্রেন না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সব থেকে বেশী সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
এদিন নিত্যযাত্রী পেশায় শিক্ষক শ্রীকান্ত পাত্র বলেন, এই ধরনের অবরোধে আমরা নিত্যযাত্রীরা সব থেকে বেশী সমস্যায় পড়ি। নিত্যযাত্রীদের স্বার্থে সরকারিভাবে এবিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ ও সমস্যা সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা জরুরি বলে তিনি জানান। প্রায় একই কথা বলেন নিত্যযাত্রী পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি বাড়ছে। রেল কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী বলে তিনি জানান।
পশ্চিম মেদিনীপুরেও অবরোধ
পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি স্টেশনে রেল লাইনে ব্যানার নিয়ে অবস্থান শুরু করল কুড়মি সমাজ। অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধ শুরু করল তারা। কুড়মিদের এসটি অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে গত এক তারিখ থেকে আন্দোলন শুরু করেছিল কুড়মিরা। বুধবার বাকি জায়গার মতো পশ্চিম মেদিনীপুরেও সকাল থেকেই শুরু হল আজ রেল অবরোধ। তার ফলে দক্ষিণ পূর্ব শাখার একাধিক ট্রেন ইতিমধ্যে বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে। বেশ কিছু ট্রেন ঘুর পথে চালানো হচ্ছে। জাতীয় সড়ক মঙ্গলবার থেকে অবরুদ্ধ।
বাঁকুড়াতে সড়ক পথেও অবরোধ
একইসঙ্গে পাশাপাশি বাঁকুড়ার কুশটাড় মোড়ে পুরুলিয়া – বরাকর রাজ্য সড়ক অবরোধও করেছেন তারা। দাবি পূরণ না হলে এই অবরোধ কর্মসূচি অনির্দিষ্টকাল ধরে চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ফলে রাস্তা রেলপথ বন্ধ হওয়ায় চরম হয়রানির শিকার সাধারণ মানুষ।